রবিবার , ২৪শে আগস্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ || ৯ই ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ - শরৎকাল || ১লা রবিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি

ডাকাতির ঘটনায় আটক ৩ ছিনতাইকৃত পিকআপ উদ্ধার ভাষানটেকে

প্রকাশিত হয়েছে- রবিবার, ৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

রাজধানীর ভাষানটেকে দস্যুতার ঘটনায় ছিনতাইকৃত পিকআপসহ তিনজনকে আটক করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) এর গোয়েন্দা মিরপুর বিভাগ। আটককৃতরা হলো হৃদয় মিয়া, বিল্লাল মিয়া ও সেলিম।

শনিবার (৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ খ্রি.) ঢাকা মহানগর, নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদী ও গাজীপুর জেলায় অভিযান চালিয়ে তাদেরকে আটক করে গোয়েন্দা-মিরপুর বিভাগের মিরপুর জোনাল টিম।

আজ রবিবার (৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ খ্রি.) দুপুরে ডিবি কম্পাউন্ডে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বিপিএম-বার, পিপিএম-বার।

 

অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) বলেন, গত (১৩ জানুয়ারি ২০২৩ খ্রি.) মোঃ আলমগীর হোসেন ঢাকার ভাষানটেক থানার বিআরবি কমপ্লেক্সের সামনে থেকে নরসিংদী জেলার শিবপুর থানা এলাকায় গিয়ে সেখান থেকে মালামাল নিয়ে পুনরায় ভাষানটেক থানা এলাকায় ফিরে আসার জন্য সাত হাজার টাকার বিনিময়ে রাসু মিয়ার মালিকানাধীন একটি পিকআপ ভাড়া করে। চুক্তি অনুযায়ী গত (১৩ জানুয়ারি ২০২৩ খ্রি.) সন্ধ্যা ৭:০০টায় পিকআপ মালিক রাসু মিয়া তার নিয়োগকৃত পিকআপ চালক মোঃ সেলিমকে নিয়ে নরসিংদী জেলার শিবপুরের উদ্দেশ্যে রওনা করে। রওনা হওয়ার সময় মোঃ আলমগীর হোসেন রাসু মিয়াকে হৃদয় মিয়া নামের এক ব্যক্তির মোবাইল নম্বর দিয়ে হৃদয় মিয়াকে মীরের বাজার এলাকা থেকে পিক-আপে উঠিয়ে নিতে বলে। কথা মতে হৃদয় মিয়াকে মীরের বাজার এলাকা থেকে পিক-আপে উঠিয়ে নিয়ে রাত ৮:০০টায় নরসিংদী জেলার পলাশ থানা এলাকায় পৌঁছার পর হৃদয় মিয়া জানায়, তার ভগ্নিপতি তাদেরকে রিসিভ করে মালামাল পিকআপে উঠিয়ে দিবে। এমন সময় এক ব্যক্তি রাস্তায় টর্চ লাইট জ্বালিয়ে সিগন্যাল দিলে হৃদয় মিয়া জানায় যে তার ভগ্নিপতি।

তিনি বলেন, পিক-আপটি থামানোর সাথে সাথে কয়েকজন অজ্ঞাত ব্যক্তি পিক-আপ মালিক ও ড্রাইভারকে চাপাতির ভয় দেখিয়ে হাত-পা বেঁধে কলাবাগানের মধ্যে ফেলে রেখে পিক-আপটি নিয়ে যায়। পরে তারা নিজ প্রচেষ্টায় বাঁধন খুলে পলাশ থানায় গিয়ে ঘটনার বিস্তারিত জানায়। গত (২২ জানুয়ারি ২০২৩ খ্রি.) ডিএমপি ঢাকার ভাষানটেক থানায় এ ঘটনায় একটি দস্যুতা মামলা রুজু হয়।

আসামীদের জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্য সম্পর্কে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার বলেন, ছিনতাই করার পর পিক-আপটি নিয়ে তারা নরসিংদী ও গাজীপুর জেলার বিভিন্ন এলাকায় যায় এবং গাড়ীর রং ও নম্বর প্লেট পরিবর্তন করে। ১৫ জানুয়ারি ২০২৩ খ্রিঃ গাজীপুর জেলার শ্রীপুর থানার নিশ্চিন্তপুর এলাকায় অবস্থিত একটি মাজার প্রাঙ্গনে পিক-আপটি রাখে। তাদের আচরণ সন্দেহজনক মনে হলে এলাকার লোকজন তাদেরকে পিক-আপটি সম্পর্কে জানতে চাইলে তারা পিক-আপটি ফেলে রেখে কৌশলে সেখান থেকে পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে শ্রীপুর থানা পুলিশ ছিনতাইকৃত পিক-আপটি পরিত্যক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।

তিনি আরো বলেন, তারা প্রত্যেকেই আন্তঃজেলা ডাকাত দলের সদস্য। তারা পিক-আপ ছিনতাই করে সেই পিক-আপ দিয়ে দেশের বিভিন্ন এলাকায় গরু ডাকাতি করে থাকে। গরু ডাকাতি করার উদ্দেশ্যেই তারা পিক-আপটি নিয়ে গত ১৫ জানুয়ারি ২০২৩ খ্রিঃ গাজীপুর জেলার শ্রীপুর থানাধীন নিশ্চিন্তপুর এলাকায় যায়।

আটককৃতদের বিরুদ্ধে নরসিংদী, গাজীপুর, ময়মনসিংহ ও নেত্রকোনা জেলায় মাদক, দস্যুতা, অপহরণ, ডাকাতি, খুন ও খুনসহ ডাকাতির প্রায় এক ডজন মামলা রয়েছে। আসামী হৃদয় মিয়ার বাড়ী নেত্রকোনা জেলার পূর্বধলা থানা এলাকায়। তার বাবা আজিজুল বিখ্যাত ডাকাত সর্দার। তার বিরুদ্ধে ৩০ এর অধিক ডাকাতির মামলা রয়েছে। ডাকাতির কারণে এলাকার লোকজন তাদেরকে এলাকা ছাড়া করেছে বলে উল্লেখ করেন ‍তিনি।

তারা প্রত্যেকেই বিভিন্ন মামলায় কারাগার থেকে জামিনে মুক্ত হয়ে পুনরায় একই কাজে নিয়োজিত হয়। গত এক মাসে গরু ডাকাতির জন্য তারা আরো দুটি পিক-আপ ছিনতাই করেছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা যায়। এই মামলায় আরো কিছু আসামী রয়েছে যাদেরকে আটকের অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানান গোয়েন্দা এই কর্মকর্তা