ঠাকুরগাঁওয়ে সরকারের বরাদ্দকৃত চাল চুরির সময় হাতে নাতে আটক হয়েছেন স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক আমিনুল ইসলাম। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত সাড়ে ৩টায় সদর উপজেলার বেগুনবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদ সংলগ্ন বেলাল হোসেন নামে এক ব্যক্তির গুদামঘর থেকে প্রায় একশ বস্তা চাল একটি ট্রাক্টরে আনলোড করার সময় স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা আমিনুল ইসলামকে হাতে নাতে আটক করে এলাকাবাসী। পরে খবর পেয়ে পুলিশ ট্রাক্টর ও চালসহ ওই নেতাকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, ইউনিয়ন পরিষদের পাশে অবস্থিত বেলাল হোসেন নামে এক ব্যক্তির গোডাউনে নিয়মিত চাল সংরক্ষণ করতেন ডিলার নুরুল আমিন। আর সেই গুদাম থেকে রাত সাড়ে ৩টার দিকে ওই ইউনিয়নের আল মামুন একটি ট্রাক্টরে করে প্রায় ১শ বস্তা সরকারি চালের বস্তা বোঝাই করে। এ সময় ট্রাক্টর চলাচলের শব্দ শুনে সেখানকার নৈশ প্রহরীসহ কয়েকজন বাসিন্দা এগিয়ে যান। তারা দেখেন, কয়েকজন লোক ট্রাক্টরে চাল তুলছে। এ সময় দ্রুত অন্যরা পালিয়ে গেলেও স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা আমিনুল ইসলামকে আটক করে। উত্তেজিত জনতা তাকে গণধোলাই দিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেয়।
তারা আরো জানান, ঈদ উপলক্ষে দরিদ্র ও দুস্থদের জন্য বরাদ্দ করা সরকারি চাল গভীর রাতে ট্রাক্টরে করে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা হচ্ছিল। আটক আমিনুল ইসলাম পশ্চিম বেগুনবাড়ি গ্রামের পাথারুর ছেলে।
আটকের পর আমিনুল জানান, ওই ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মৃত গফুর আহমেদের ছেলে ওয়াদুদ হাসান, সাধারণ সম্পাদক নুরুল আমিন, কৃষক দলের সাংগঠনিক সম্পাদক কামাল ও স্থানীয় বাসিন্দা মৃত নাসির উদ্দিনের ছেলে সুলতান চাল চুরির সাথে জড়িত। তারা পালিয়ে গেছে।
চাল কোন ডিলারের কাছে ছিল এমন তথ্য জানতে চাইলে সদর উপজেলার খাদ্য কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান জানান, কোন ডিলার চাল নিয়ে গেছে তা নিশ্চিত করতে সময় লাগবে। তবে গুদাম থেকে চাল বের হওয়ার পর খাদ্য বিভাগের কোনো দায়িত্ব নেই। তবে চাল চুরির ঘটনাটি সত্য বলে নিশ্চিত করেছেন তিনি।
এ ব্যাপারে জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব কামরুজ্জামান কামু বলেন, চাল কাণ্ডের বিষয়টা শুনেছি, চাল চুরির ঘটনায় যেই জড়িত থাকুক না কেন, তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. খাইরুল ইসলাম জানান, সরকারি চাল চুরির ঘটনাটি অত্যন্ত নিন্দনীয়। এ ঘটনায় একজনকে আটক করা হয়েছে এবং তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সদর থানার ওসি শহিদুর রহমান বিষয়টির সত্যতা স্বীকার করে বলেন, রাতেই ট্রাক্টর ও চালসহ একজনকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় এখনো মামলা হয়নি। বিষয়টি আরো তদন্ত করা হচ্ছে।