ইরান পরমাণু চুক্তি না করলে দেশটিতে যুক্তরাষ্ট্র বোমাবর্ষণ করবে বলে হুমকি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এমনকি এই আক্রমণের তীব্রতা অভূতপূর্ব হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
ট্রাম্পের এই হুমকির পর যুক্তরাষ্ট্রকে পাল্টা হুমকি দিয়েছে ইরান। দেশটির সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, যেকোনও “বহিরাগত আগ্রাসনের” “কঠোর প্রতিশোধ” নেওয়া হবে।
সোমবার (৩১ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।
বার্তাসংস্থাটি বলছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ইরানে “বোমা হামলার” হুমকির প্রেক্ষিতে প্রথম প্রতিক্রিয়ায় ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, যেকোনও “বহিরাগত আগ্রাসনের” “কঠোর প্রতিশোধ” নেওয়া হবে।
সোমবার তেহরানে ঈদুল ফিতরের নামাজের সময় একটি জামাতে ভাষণকালে খামেনি বলেন, বহিরাগত আগ্রাসন অসম্ভব, তবে দেশ যেকোনও পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত।
তিনি বলেন, “আমরা বিশ্বাস করি না যে কোনও বহিরাগত আগ্রাসনের সম্ভাবনা রয়েছে, তবে যদি কোনও আগ্রাসন ঘটে, তবে তারা নিঃসন্দেহে একটি কঠোর প্রতিশোধমূলক আঘাত পাবে। এবং যদি তারা আমাদের দেশের অভ্যন্তরে রাষ্ট্রদ্রোহ উস্কে দেওয়ার কথা ভাবে — যেমন তারা বিগত বছরগুলোতেও করেছে — তাহলে ইরানের জনগণ নিজেই তাদের জবাব দেবে।”
ট্রাম্প ইরানকে দেশটির পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে আমেরিকার সাথে একটি চুক্তিতে পৌঁছাতে ব্যর্থ হলে বোমা হামলা এবং সেকেন্ডারি শুল্ক আরোপের হুমকি দেওয়ার একদিন পর ইরানের সর্বোচ্চ নেতার পক্ষ থেকে এই মন্তব্য করা হলো।
ইরান পরমাণু অস্ত্র তৈরি করতে চাইলে যুক্তরাষ্ট্র ঠেকাতে পারতো না
ইরান মূলত ট্রাম্প প্রশাসনের সাথে সরাসরি আলোচনার বিষয়টি প্রত্যাখ্যান করেছে। তবে পরোক্ষ আলোচনার মাধ্যমে বিতর্কিত পারমাণবিক সমস্যা সমাধানের জন্য কূটনৈতিক পথ খোলা রেখেছে তেহরান।
ইরান সরকার গত সপ্তাহে ওমানের মাধ্যমে ট্রাম্পের চিঠির জবাব দিয়েছে। ওই চিঠিতে সামরিক হুমকির মুখে সরাসরি আলোচনায় অংশ নিতে ইরান অনিচ্ছুক বলে উল্লেখ করা হয়েছে বলে গত বৃহস্পতিবার ইরানি পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি বলেছেন।
এছাড়া গত রোববার ইরানের এক টিভি চ্যানেলে প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান জানিয়েছেন, “আমেরিকার সঙ্গে এই চুক্তি নিয়ে সরাসরি কথা বলবে না তেহরান। তবে পরোক্ষ আলোচনার সুযোগ রয়েছে।”
তিনি আরও জানান, আমরা আলোচনায় বসতে সবসময়ই প্রস্তুত। কিন্তু আগের বিশ্বাসভঙ্গের কারণে আমরা সন্দিহান। এছাড়া ইরানের নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনিও পরোক্ষ আলোচনার পক্ষে বলে জানিয়েছেন তিনি।
এদিকে সোমবার খামেনি আরও বলেন, গাজা ও লেবাননের ঘটনাবলীর কারণে এই বছরের পবিত্র রমজান মাস বিশ্বব্যাপী মুসলমানদের জন্য ছিল “তিক্ত”। ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে ইসরায়েলি নৃশংসতায় আমেরিকা জড়িত বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
তিনি ইসরায়েলকে পশ্চিম এশিয়া অঞ্চলে পশ্চিমা শক্তিধর দেশগুলোর একটি “প্রক্সি শক্তি” হিসাবে উল্লেখ করেন এবং জোর দিয়ে বলেন, “অপরাধী গোষ্ঠী”-কে “ফিলিস্তিন থেকে উৎপাটন করতে হবে”।