1. numanashulianews@gmail.com : kazi sarmin islam : kazi sarmin islam
  2. islamkazisarmin@gmail.com : newstv : Md newstv
  3. admin@newstvbangla.com : newstvbangla : Md Didar
জার্মানিতে বাড়িভাড়া নিয়ে বৈষম্য - NEWSTVBANGLA
শুক্রবার, ২৩ মে ২০২৫, ১১:০৯ অপরাহ্ন

জার্মানিতে বাড়িভাড়া নিয়ে বৈষম্য

আন্তর্জাতিক ডেস্ক :

জার্মানিতে বাড়িভাড়া নিয়ে বৈষম্য : বেশি অর্থ গুনছেন বিদেশিরা
বাড়িভাড়া নিতে গিয়েও ভাড়া বেশি দেওয়াসহ নানা বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন জার্মানিতে বসবাসরত অভিবাসীরা
জার্মানিতে বাড়িভাড়ার ক্ষেত্রে জার্মান নাগরিকদের চেয়ে বিদেশিদের খরচ হচ্ছে বেশি। বাড়িভাড়ায় অন্তত ১০ শতাংশ বেশি অর্থ গুনতে হচ্ছে জার্মানিতে বসবাসরত বিদেশিদের।
ফেডারেল স্ট্যাটিস্টিকাল অফিস বুধবার জানিয়েছে, জার্মানিতে থাকা বিদেশিরা বাড়িভাড়া, আবাসনের মালিকানা এবং থাকার জায়গার ক্ষেত্রের বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন।
২০২২ সালের আদমশুমারির ওপর ভিত্তি করে এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে জার্মান পরিসংখ্যান অফিস।

এতে বলা হয়েছে, জার্মান নাগরিকত্ব নেই এমন ব্যক্তিদের প্রতি বর্গমিটারে গড়ে সাত দশমিক সাত পাঁচ ইউরো বাসা ভাড়া দিচ্ছেন। আর জার্মান নাগরিকেরা দিচ্ছেন সাত দশমিক শূন্য আট ইউরো। যা বিদেশিদের তুলনায় নয় দশমিক পাঁচ শূন্য শতাংশ বেশি।

এটি শুধু মূল বাড়িভাড়ার হিসাব, যা জার্মানিতে কাল্টমিটে নামে পরিচিতি। অর্থাৎ এর সঙ্গে বিদ্যুৎ, হিটার (শীতপ্রধান দেশে ঘর উষ্ণ রাখার ব্যবস্থা), পানি, ইন্টারনেট এবং টেলিভিশনসহ অন্যান্য খরচ সংযুক্ত নয়।

আনুষাঙ্গিক এসব খরচ পরিবারের সদস্য সংখ্যা এবং ব্যবহারের ওপর নির্ভর করে। ফেডারেল স্ট্যাটিস্টিকাল অফিস বলছে, বাড়িভাড়ার ব্যয় তুলনায় কোল্ড রেন্ট বা কাল্টমিটে হলো নির্ভরযোগ্য উপাদান।

২০২২ সালের আদমশুমারির তথ্য থেকে দেখা গেছে, জার্মানিতে বাসা ভাড়ার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য আঞ্চলিক বৈষম্য রয়েছে। দেশজুড়ে গড়ে কাল্টমিটে ছিল প্রতি বর্গমিটারে সাত দশমিক দুই আট ইউরো। কিন্তু প্রধান প্রধান শহরগুলোতে এর পরিমাণের ছিলে গড় হিসাবের চেয়ে অনেক বেশি।

যেমন, মিউনিখে সর্বোচ্চ গড় কাল্টমিটে ছিল প্রতি বর্গমিটারে ১২ দশমিক আট নয় ইউরো, ফ্রাঙ্কফুর্ট ১০ দশমিক পাঁচ আট ইউরো, স্টুটগার্টে ১০ দশমিক তিন নয় ইউরো এবং হাইডেলবের্গে দশ দশমিক শূন্য দুই ইউরো।
বড় শহরগুলোর মধ্যে একটু ব্যতিক্রম দেখা গেছে রাজধানী বার্লিনে। শহরটিতে প্রতি বর্গমিটারে গুণতে হতো সাত দশমিক ছয় সাত ইউরো।

পরিসংখ্যান বলছে, বড় বাসার তুলনায় ছোট বাসার ভাড়া বেশি। বিদেশি নাগরিকেরা ছোট বাড়িতেই বেশি থাকেন এবং প্রতি বর্গমিটারে বাড়তি ভাড়া গুণেন। ২০২২ সালে ২৫ শতাংশ বিদেশি নাগরিক ৬০ বর্গমিটারের চেয়ে ছোট অ্যাপার্টমেন্টে থাকতেন। আর এমন বাসায় জার্মান নাগরিকেরা থাকতেন মাত্র ১২ শতাংশ।

এই ছোট বাসাগুলোর গড় ভাড়া ছিল প্রতি বর্গমিটারে আট দশমিক শূন্য এক ইউরো। ৬০ মিটারের বড় বাসাগুলোর গড় ভাড়া ছিল ছয় দশমিক নয় তিন ইউরো। ছোট বাসার জন্য বড় বাসার তুলনায় প্রতি বর্গমিটারে ১৫ দশমিক ছয় শতাংশ বাড়তি ভাড়া দিতে হতো।
বিদেশিদের ক্ষেত্রে বড় বাসাগুলোর আকার ছিল গড়ে ৮৫ দশমিক সাত বর্গমিটার, জার্মানদের ক্ষেত্রে সেটির আকার গড়ে ১০৯ দশমিক ছয় বর্গমিটার।

সরকারের পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, বাড়ির মালিকানার ক্ষেত্রেও রয়েছে তীব্র বৈষম্য। ২০২২ সালে ৫৪ শতাংশ জার্মান তাদের নিজস্ব বাড়িতে থাকলেও, বিপরীতে মাত্র ২২ শতাংশ বিদেশি নাগরিক বাড়ির মালিক হয়েছিলেন। কারণ বেশিরভাগ বিদেশি ভাড়া বাসাতেই থাকেন।

বাসা ভাড়ার সময়কাল বিবেচনায় দেখা যায়, অন্তত ৫১ শতাংশ জার্মান নাগরিক একই বাসায় এক দশক বা তারও বেশি সময় ধরে বসবাস করছেন। বিপরীতে, বিদেশি নাগরিকদের মাত্র ২০ শতাংশ এত দীর্ঘ সময় ধরে একটি বাসায় বসবাস করেন।
যদিও ধরে নেওয়া হয়, জার্মানরা একটি বাড়িতে দীর্ঘ সময় থাকেন বলেই তাদেরকে কম ভাড়া দিতে হয়। কিন্তু পরিসংখ্যান বলছে ভিন্ন কথা। ভাড়াটিয়ারা তাদের বর্তমান ঠিকানায় কতদিন বসবাস করেছেন, সেটা মাথায় রেখে হিসাব করলেও বিদেশি নাগরিকেরা ধারাবাহিকভাবে প্রতি বর্গমিটারে বেশি ভাড়া দেয়।

যেসব বিদেশি একটি ঠিকানায় ২০ বছর বা তার বেশি সময় ধরে বসবাস করেছেন, তারাও সমান সময় ধরে বসবাস করে আসা জার্মানদের তুলনায় নয় দশমিক এক শতাংশ বেশি ভাড়া দিয়েছেন। অন্যান্য দীর্ঘমেয়াদি ভাড়াটিয়াদের মধ্যেও ভাড়ার ব্যবধান উল্লেখযোগ্য ছিল। যারা ১৫ থেকে ২০ বছর ধরে একই বাসায় ছিলেন তারা পাঁচ দশমিক নয় শতাংশ বেশি ভাড়া দিয়েছেন এবং যারা ১০ থেকে ১৫ বছর ধরে বসবাস করছেন তারা সাত শতাংশ বেশি ভাড়া দিয়েছেন।

এক বছরেরও কম সময়ের মধ্যে নতুন ভাড়াটিয়া হিসাবে যারা বিভিন্ন বাসায় উঠেছেন, সেখানেও দেখা গেছে বিদেশিদের জার্মানদের তুলনায় তিন দশমিক পাঁচ শতাংশ বেশি ভাড়া দিতে হচ্ছে।

জার্মানির বার্লিন, মিউনিখ এবং ফ্রাঙ্কফুর্টের মতো বড় শহরগুলোতে আবাসন সংকট তীব্র হচ্ছে। একসময় সাশ্রয়ী মূল্যের জীবনযাত্রার স্বর্গ হিসেবে পরিচিত বার্লিনেও বাসা ভাড়া নাটকীয়ভাবে বেড়েছে।
বার্লিন ভাড়াটিয়া সমিতির কমিশন করা একটি সমীক্ষা বলছে, শহরটির প্রায় এক তৃতীয়াংশ পরিবারকে বাজার মূল্যের বাসা ভাড়া নিতে ভোগান্তিতে পড়তে হয়। কারণ, শহরের অর্ধেকেরও বেশি ভাড়াটিয়া পরিবার স্বল্পআয়ী হওয়ার কারণে সরকারি সহায়তা পাওয়ার যোগ্য।

ফেডারেল বৈষম্যবিরোধী সংস্থা পরিচালিত গবেষণা বলছে, জার্মানির আবাসনখাতের বৈষম্য একটি ব্যাপক এবং গভীর সমস্যা। বিশেষ করে যারা অভিবাসী বা অভিবাসন অতীত রয়েছে, তাদেরকে এর শিকার হতে হচ্ছে বেশি।

একটি জরিপে দেখা গেছে, অভিবাসী অতীত আছে এমন অন্তত ৩৫ শতাংশ মানুষ বাসা খোঁজার সময় বর্ণগত বৈষম্যের শিকার হয়েছেন। জরিপের উত্তরদাতাদের ৮৩ শতাংশ বিশ্বাস করেন, ভাড়া সংক্রান্ত সিদ্ধান্তেও বর্ণবাদ খবুই তীব্র।
বৈষম্যের রূপগুলোও ভিন্ন ভিন্ন হয়। এর মধ্যে রয়েছে বাসা দেখার অনুমতি না দেওয়া, অতিরিক্ত ভাড়া দাবি করা, কিংবা আপত্তিকর মন্তব্য সহ্য করা। কোনো কোনো ক্ষেত্রে বাড়িওয়ালারা বিদেশি নাম দেখেই আবেদনকারীদের সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।

বাস্তবতা হলো, এসব বৈষম্যের ঘটনায় বেশিরভাগ সময়ই অভিযোগ দায়ের করা হয় না। পক্ষপাতমূলক আচরণ কিংবা বৈষম্যের ঘটনা প্রমাণের চ্যালেঞ্জ এবং সাধারণ আইন সম্পর্কে সচেতনতার অভাবেই অভিযোগ জমা পড়ে না।
বৈষম্যবিরোধী সংস্থাটি “ফেয়ার মিটেন – ফেয়ার ভোনেন” বা “ন্যায্য ভাড়া – ন্যায্য বসতি” নির্দেশিকা দেখার আহ্বান জানিয়েছেন, যাতে ভাড়াটিয়ারা আবাসনখাতে বৈষম্যমূলক আচরণ চিহ্নিত করে চ্যালেঞ্জ করতে পারেন।

আবাসন খোঁজায় পরামর্শ বা সহায়তা পেতে রয়েছে কয়েকটি সংস্থা। প্রয়োজন হলে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন।

ফেডারেল বৈষম্যবিরোধী এজেন্সি : গোপনীয়তার সঙ্গে পরামর্শ দিয়ে থাকে সংস্থাটি। ‘সবার জন্য সমান অধিকার’ আইনের অধীনে কেউ বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন কিনা, তা মূল্যায়ন করে সংস্থাটি। তার ভিত্তিতে আইনি সহায়তা কেন্দ্র বা স্থানীয় পরিষেবাগুলোতে তাদেরকে পাঠানো হয়।
সংস্থাটির পরিষেবার মধ্যে রয়েছে বিনামূল্যে পরামর্শ (ফোন, ইমেল বা ওয়েব ফর্মের মাধ্যমে) এবং শিক্ষামূলক উপকরণ সরবরাহ করা। এছাড়াও বার্লিন অফিস অ্যাগেইনস্ট ডিসক্রিমিনেশন ইন হাউজিং মার্কেট নামের সংস্থাটিও বাসা ভাড়া নিতে গিয়ে বৈষম্যের শিকার ব্যক্তিদের সহযোগিতা দিয়ে থাকে।

জার্মান ভাড়াটিয়া অ্যাসোসিয়েশন (ডয়েচার মিটারবুন্ড ডিএমবি) : ভাড়াটিয়াদের আইনি পরামর্শ এবং সহযোগিতা দিয়ে থাকে। বৈষম্যের শিকার ব্যক্তিরা এই প্রতিষ্ঠান থেকে সহযোগিতা চাইতে পারবেন। এটি মূলত সদস্যপদ কেন্দ্রিক সংগঠন। তাই বাৎসরিক ফি দিতে হয়।

ইন্টিগ্রেশন কাউন্সিল / অফিসেস ফর ইন্টিগ্রেশন এবং মাইগ্রেশন : এটি মূলত পৌর প্রশাসনের অংশ। অভিবাসীদের সহায়তা দেওয়ার পাশাপাশি আবাসন খুঁজে পেতে পরামর্শ ও বৈষম্যের শিকারদের সহযোগিতা দিয়ে থাকে।
প্রতিটি শহরের ওয়েবসাইট থেকে “ইনটেগ্রাৎসিওনবেআউফট্রাগটে” (Integrationsbeauftragte) অথবা “মাইগ্রাৎসিওনবেয়ারটুং” (Migrationsberatung) খুঁজে নিয়ে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা যাবে।

প্রাপ্তবয়স্ক অভিবাসীদের জন্য অভিবাসন পরামর্শ (এমবিই) : দাতব্য সংস্থা পরিচালিত এমন প্রতিষ্ঠানগুলো আবাসন, বৈষম্য এবং আইনি অধিকার সম্পর্কে বহুভাষিক পরামর্শ দিয়ে থাকে। ইনফোমাইগ্রেন্টস

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2015
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: রায়তাহোস্ট