পঞ্চগড়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশ নেওয়া আল আমিন নামে এক রিকশাচালককে হত্যার পর লাশ গুমের অভিযোগে দায়ের করা মামলার প্রধান আসামি সাবেক রেলপথ মন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজনের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণ করেছেন আদালত।
রোববার (১ ডিসেম্বর) সকাল ১০টায় পঞ্চগড় সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্টেট আদালতে হাজির করা হলে শুনানি শেষে আদালতের বিচারক মো. আশরাফুজ্জামান তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন।
এর আগে শনিবার (৩০ নভেম্বর) রাতে সাবেক এই মন্ত্রীকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে একটি প্রিজনভ্যানে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর পাহারায় পঞ্চগড় জেলা কারাগারে আনা হয়।
আদালত সূত্রে জানা যায়, পঞ্চগড়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নিয়ে গুম হয় আল আমিন। এ ঘটনায় আল আমিনের বাবা মনু মিয়া গত ১০ নভেম্বর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক রেলমন্ত্রী সুজনসহ ১৯ জনকে আসামি করে হত্যা ও গুমের মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় আরও ১৫০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়।
মামলার অপর আসামিরা হলেন- পঞ্চগড়-১ আসনের আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য নাঈমুজ্জামান ভুঁইয়া, একই আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মজাহারুল হক প্রধান, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার সাদাত সম্রাট, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আরিফুল ইসলাম পল্লব, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আবু নোমান হাসান, সাধারণ সম্পাদক সাদমান সাদিক প্লাবন পাটোয়ারী, পঞ্চগড় পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর আশরাফুল ইসলাম, হাসনাত মো. হামিদুর রহমান, পঞ্চগড় পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি কাজী আল তারিক, সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির উজ্জলসহ ১৯ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
পঞ্চগড় জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট আদম সুফি সাংবাদিকদের বলেন, আল আমিন ছাত্র-জনতার আন্দোলনের একজন সম্মুখ সারির যোদ্ধা ছিলেন। তাকে গুম করে হত্যা করা হয়েছে। এই মামলার প্রধান আসামীকে আদালতে তোলা হলে আমরা আসামির বিরোধিতা করেছি। আদালত তার জামিন না মঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দিয়েছে। অতি শীঘ্রই রিমান্ডের আবেদন করা হবে।
এদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবী মির্জা সারোয়ার হোসেন বলেন, অ্যাডভোকেট নুরুল ইসলাম সুজনকে এজাহারের প্রধান আসামি করা হয়েছে। তাকে আদালতের তোলার পর জামিনের জন্য আবেদন করা হয়েছিল, আদালত জামিন না মঞ্জুর করেছে। তবে আদালত তাকে ডিভিশন মন্জুর করেছে। একই সঙ্গে এজাহারে যে অভিযোগ তোলা হয়েছে, যেহেতু ভিকটিমকে পাওয়া যাচ্ছে না তাহলে এটা কোনো ভাবে ৩০২ ধারায় পড়তে পারে না। আমরা বিষয়টি আদালতকে অবগত করেছি।