জামালপুরে ইফতারের প্যাকেট না পেয়ে দুই গ্রুপের সংঘর্ষে সাংবাদিকসহ ৬ জন আহত হয়েছেন। গতকাল সন্ধ্যায় ইফতারের পর শহরের আজাদ ডাক্তার মোড় সংলগ্ন খেজুরতলা এলাকায় এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
আহত সাংবাদিকরা হলেন— দেশ টিভির জামালপুর জেলা প্রতিনিধি রিয়াদ হাসান (২৮), দৈনিক দেশ সংবাদ পত্রিকার সাংবাদিক সালাউদ্দিন মিঠু (৩০), ডিবিসি নিউজের ক্যামেরাপার্সন সানজিদুল আকন্দ মাশফিকে (২৭)। আরও আহত হয়েছেন, জামালপুর পৌর শহরের তেতুলিয়া এলাকার মঞ্জু হাসান মুসার দুই ছেলে জাহিদুল ইসলাম আশেক (২২) ও জিহান (১৪), মুসলিমাবাদ এলাকার শুভ (৩৫)। আহতরা জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বুধবার সন্ধ্যায় শহরের খেজুরতলা এলাকায় মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়নের প্রয়াত সভাপতি জকিউল হাসান সাবুর স্মরণে দোয়া ও ইফতার আয়োজন করে তার পরিবার। ইফতারের সময় খাবারের প্যাকেট কম পড়ায় স্থানীয়দের সাথে মাইক্রোবাস ড্রাইভারদের মারামারি হয়। খবর পেয়ে সাংবাদিকরা ঘটনাস্থলে গিয়ে মারামারির ভিডিও ধারণ করতে গেলে পুলিশের উপস্থিতিতেই দেশ টিভির জামালপুর জেলা প্রতিনিধি রিয়াদ, দৈনিক দেশ সংবাদ পত্রিকার সাংবাদিক সালাউদ্দিন মিঠু, ডিবিসি নিউজের ক্যামেরাপার্সন সানজিদুল আকন্দ মাশফিকে ব্যাপক মারধর করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে তিনটি মোবাইল সেট ও আইডি কার্ড ছিনিয়ে নেয় হামলাকারীরা। এই ঘটনায় জামালপুর পৌর শহরের তেতুলিয়া এলাকার মঞ্জু হাসান মুসার দুই ছেলে জাহিদুল ইসলাম আশেক ও জিহান, মুসলিমাবাদ এলাকার শুভ আহত হয়েছেন। পরে আহতদের উদ্ধার করে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে করে স্থানীয়রা ।
ডিবিসি নিউজের ক্যামেরাপার্সন সানজিদুল আকন্দ মাশফিক বলেন, ইফতার নিয়ে মারামারির খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যাই। ভিডিও করার সময় কয়েকজন লোক আমাদের ওপর হামলা করে ক্যামেরা ও মোবাইল ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে কিন্ত পারেনি। ক্যামেরা ও মোবাইল না দেওয়ায় তারা আমাদের তিনজনের ওপর ব্যাপক মারধর করে। আমার আইডি কার্ড ও অন্য দুই সাংবাদিকের তিনটি মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়েছে হামলাকারীরা। পরে আমার এক বন্ধুর সহযোগিতায় জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হই।
এ ব্যাপারে জামালপুর জেলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও ডিবিসি নিউজ, বাংলাদেশ প্রতিদিনের সাংবাদিক শুভ্র মেহেদী বলেন, যে কোনো পরিস্থিতিতে সাংবাদিকরা তাদের পেশাগত দায়িত্ব পালন করবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে সাংবাদিকদের উপর আক্রমণ স্বাধীন সাংবাদিকতায় বড় ধরনের বাধা। এ ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা ছিল হতাশাজনক, দুঃখজনক। হামলায় যারা জড়িত তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি যানাচ্ছি।
জামালপুর জেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি ফজলে এলাহী মাকাম বলেন, পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় সাংবাদিকদের ওপর হামলা অত্যন্ত ন্যাক্কারজনক। হামলাকারীদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি। সাংবাদিকদের কাছ থেকে সংবাদ সংগ্রহের সরঞ্জাম ও আইডি কার্ড ছিনিয়ে নেওয়ায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান তিনি।
জামালপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু ফয়সল মো. আতিক বলেন, ইতোমধ্যে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে হাসপাতালে ভর্তি আহতদের খোঁজ-খবর নিয়েছি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।