সিলেটের জকিগঞ্জে কয়েক দিনের টানা ভারী বৃষ্টিপাত ও ভারতের আসামের পাহাড়ি ঢলের ফলে কুশিয়ারা নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে নদীর অন্তত তিনটি স্থানে বাঁধ ভেঙে পৌর শহরসহ বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। দোকানপাট ও বসতবাড়িতে পানি ঢুকে পড়ায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
রোববার (১ জুন) দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে জকিগঞ্জ সদর ইউনিয়নের রারাই গ্রামের পাশ দিয়ে কুশিয়ারা নদীর ডাইক ভেঙে পানি প্রবেশ শুরু করে। এরপর সোমবার (২ জুন) ভোররাতে একই ইউনিয়নের বাখরশাল এবং সকাল ৮টার দিকে খলাছড়া ইউনিয়নের লোহারমহল এলাকায় বাঁধে নতুন করে ভাঙন দেখা দেয়। এসব স্থান দিয়ে প্রবল স্রোতে পানি লোকালয়ে ঢুকে পড়ে।
এছাড়া কেছরী গ্রামের পাশ দিয়ে ডাইকের ওপর দিয়ে কুশিয়ারার পানি পৌর শহরে ঢুকছে। মাইজকান্দি গ্রামের কাছে ডাইকের একটি অংশ নদীতে ধসে পড়েছে। ছবড়িয়া, সেনাপতিরচক, ইছাপুর, পিল্লাকান্দি, আমলশীদসহ উপজেলার অন্তত ৫০টি স্থানে পানি ডাইকের ওপর দিয়ে প্রবেশ করছে।
পানি ঢুকে পড়েছে বহু ঘরবাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। জকিগঞ্জ পৌর শহরের প্রধান সড়ক তলিয়ে গেছে। দোকানপাটে পানি ঢুকে ব্যবসায়ীদের চরম ক্ষতির মুখে পড়তে হয়েছে, দুর্ভোগে রয়েছেন সাধারণ মানুষও।
জকিগঞ্জ পৌর শহরের ব্যবসায়ী আব্দুল মান্নান বলেন, রাতের আঁধারে পানি দোকানে ঢুকে পড়ে। কোনো মালপত্র সরাতে পারিনি। অনেক টাকার ক্ষতি হয়ে গেছে। এখনও দোকানে পানি রয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাশ বলেন, কুশিয়ারা নদীর পানি বিপৎসীমার প্রায় ২ মিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এ কারণে বাঁধ ভেঙে হোক বা উপচে হোক, পানি লোকালয়ে প্রবেশ করছে। তবে আশার কথা হচ্ছে, ভারত অঞ্চলে বৃষ্টিপাত কমে এসেছে। আশা করছি, আগামী দুই দিনের মধ্যে পরিস্থিতির উন্নতি হবে।
সিলেটের জেলা প্রশাসক শের মাহবুব মুরাদ বলেন, বন্যা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ ও মোকাবিলায় আমরা সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছি। প্লাবন প্রবণ এলাকার বাসিন্দাদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। প্রয়োজনে তাদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ার জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি রাখা হয়েছে।