শুক্রবার , ৬ই জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ || ২৩শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ - গ্রীষ্মকাল || ১০ই জিলহজ, ১৪৪৬ হিজরি

‘ছেলে-মেয়ে নিয়ে ঘুমাচ্ছিলাম, এক ঝাপটায় সব উড়ায়ে নিয়ে গেল’

প্রকাশিত হয়েছে- সোমবার, ২ জুন, ২০২৫

‘এক ঝাপটায় সব শেষ। ছেলেমেয়ে লইয়া এহন কই যাইমু। ঘর যে বানামু সেই সামর্থ্য নাই।’ কথাগুলো বলছিলেন নড়াইলের রেজাউল মিনা (৪০)।

নড়াইল সদর উপজেলার কলোড়া ইউনিয়নের আগদিয়া গ্রামের বাসিন্দা রেজাউল। বাঁশের খুঁটি, টিনের চালা ও টিনের বেড়া দিয়ে নির্মিত তার ঘর। রোববার (১ জুন) রাতে মাত্র ১০ মিনিটের ঝড় সব তছনছ করে দিয়ে যায়। বাতাসের বেগে ঘরটি তার মিশে গেছে মাটির সঙ্গে। একমাত্র থাকার ঘরটি ভেঙে পড়ায় বড় বিপাকে পড়েছেন তিনি।

স্ত্রী ও চার সন্তান নিয়ে মাটির সঙ্গে মিশে যাওয়া টিনের চালাটা দাঁড় করানোর চেষ্টা করছেন তিনি। একদিকে বাঁশ দিয়ে ঠেস দিলে পাতলা টিন অন্যদিকে বেঁকে যাচ্ছে।

সোমবার (২ জুন) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মাটির তৈরি মেঝেতে তিনটি চৌকি। তাতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে জামা, প্যান্ট বিছানার চাদর, বই-খাতা। পাশে রয়েছে চালের ড্রামসহ ঘরের আসবাবপত্র। সবকিছু থাকলেও নেই ঘরের চালা ও টিনের বেড়া। পুরো ঘরটি উড়ে গেছে ঝড়ে।

রেজাউল মিনা বলেন, রাতে ছেলে-মেয়ে নিয়ে ঘুমাচ্ছিলাম, বৃষ্টি হচ্ছিল, হঠাৎ ঝড় শুরু হয়। ১০ মিনিটের মধ্যে এক ঝাপটায় সব উড়ায়ে নিয়া গেল। ছেলে-মেয়ে নিয়ে জানটা বাঁচানোই দায় হয়ে পড়ে। দৌড়ে গিয়ে উঠলাম পাশের বাড়ি। ধার-দেনা হয়ে ঘরটা বানাইছিলাম। এহন যে কী করি? সামনে আবার ঈদ।

আগদিয়া গ্রামের মিরন শেখ বলেন, রেজাউল অসহায় মানুষ। প্রাকৃতিক দুর্যোগে তার এমন ক্ষতি মেনে নেওয়া যায় না। সরকারি কোনো সহায়তা পেলে মানুষটি উপকৃত হতো।

কলোড়া ইউনিয়নের ৪নং ইউপি সদস্য নেছের আলী বলেন, রাতের ঝড়ে রেজাউলের ঘর উড়ে গেছে। আমি সকালে তাদের দেখে এসেছি। তাদের উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর একটি আবেদন দিতে বলেছি।

নড়াইল সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সঞ্চিতা বিশ্বাস বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি আমাদের অফিসে এলে আমরা সরকারি নিয়মে তাকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করব।