আশুলিয়ায় চাদাঁবাজির বিষয়ে বক্তব্য চাওয়ায় সাব্বির আহম্মেদ নামে এক সাংবাদিককে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে।
বুধবার (৫ মার্চ) এই ঘটনায় ঢাকার আশুলিয়া থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
ভুক্তভোগী সাংবাদিক সাব্বির আহম্মেদ বর্তমানে জাতীয় দৈনিক বাংলাদেশ সমাচার পত্রিকায় বিশেষ প্রতিবেদক হিসেবে কর্মরত আছেন।
থানায় অভিযোগ সুত্রে জানা গেছে, চলতি মাসের ৩ তারিখে আল আমিন খান নামের এক শ্রমিকনেতা চাদাঁবাজ মিজানুর রহমানের নামে আশুলিয়া থানায় ১ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করা এবং চাঁদা না দিলে তাকে প্রান নাশের হুমকি প্রদান করার বিষয় নিয়ে একটি অভিযোগ দায়ের করেন।
পরবর্তীতে এই বিষয়ে সংবাদ প্রকাশের জন্য ভূক্তভোগী আল আমিন সাংবাদিক সাব্বিরের নিকট থানায় দায়ের করা অভিযোগের কপিসহ ভিডিও বক্তব্য প্রদান করে। এরই প্রেক্ষিতে পেশাগত দায়িত্ব থেকে তথ্য অনুসন্ধানের প্রয়োজনে সাংবাদিক সাব্বির বিবাদী মিজানের মুঠোফোনে চাদাঁবাজির বিষয়ে তার বক্তব্যর জন্য ফোনে কল করলে সন্ত্রাসী মিজান অকথ্য ভাষায় বকাবকিসহ গালাগালি করতে থাকে এবং তার চাঁদাবাজির বিষয়ে কোন অনুসন্ধান করলে অথবা সংবাদ প্রকাশ করলে প্রানে মেরে ফেলার হুমকি প্রদান করে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আওয়ামী লীগের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত শ্রমিক নেতা মিজান আশুলিয়ার শ্রমিক অসন্তোষের সাথে জড়িতও বলে অনেকে অভিযোগ করেন। নানা সময় অপ্রীতিকর পরিবেশ তৈরি করে বিভিন্ন ফ্যাক্টরি থেকে শ্রমিকদের টাকা আত্মসাৎ করাই তার প্রধান কাজ। কিছুদিন আগেই বার্ডস গ্রুপের শ্রমিকদের প্রায় ২০ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করে শ্রমিকদের রাস্তায় নামিয়ে শিল্পাঞ্চল আশুলিয়াকে প্রায় অচল করে পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে পরিবেশ একটু স্বাভাবিক হতেই আবারও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে এই চাঁদাবাজ মিজান। নাম প্রকাশ না করার স্বার্থে কয়েক নারী শ্রমিক ও শ্রমিকনেতা মিজান সম্পর্কে অভিযোগ করে বলেন, সে অনেক নারী শ্রমিকদেরকে লাঞ্চিত করাসহ ধর্ষণ চেষ্টার মতো এমন জঘন্য কাজের সাথে জড়িত।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শ্রমিক নেতা আরও জানান, কিছুদিন আগে বার্ডস গ্রুপের কারখানার শ্রমিকদের টাকা আত্মসাৎ করে এই চক্রটি। এবং তাদের মধ্যে সেই টাকা ভাগাভাগি নিয়ে ঝামেলার সৃস্টি হয়। আর এর পর থেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কারখানা থেকে টাকা আত্মসাৎ এর রিসিপ্ট প্রকাশিত হয়ে ভাইরাল হওয়ার পর মিজান ও তার চক্রের লোকজন এলাকা থেকে গাঢাকা দেয়। এছাড়াও এই চক্রটি বিভিন্ন সময়ে শ্রমিকদের উস্কানি দিয়ে আশুলিয়ায় শ্রমিক অসন্তোষ সৃষ্টি করে থাকে বলে অভিযোগ আছে। শিল্পাঞ্চলের ব্যবসায়ীসহ স্থানীয় বাসিন্দারা মনে করেন এই চক্রটিকে দ্রত আইনের আওতায় না আনা হলে শিল্পাঞ্চলের যেকোনো সময় আবারও অস্থিরতা তৈরি হতে পারে।
এদিকে বিষয়টি নিয়ে সাভার-আশুলিয়ায় কর্মরত প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় কর্মরত সংবাদ কর্মীরা তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন । সেই সাথে এই সন্ত্রাসীকে দ্রুত আইনের আওতায় আনার জোর দাবি জানিয়েছেন।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত শ্রমিক নেতার সাথে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মাসুদ আল মামুন বলেন, এ ধরনের (সাংবাদিককে হত্যার হুমকি সংক্রান্ত) একটি অভিযোগ পেয়েছি, তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।