ছেলেবেলায় মায়েরা বলতেন, বেশি ঘুমোলে নাকি মোটা হয়। এই ধারণা কি ঠিক? না কি পর্যাপ্ত ঘুম ওজন ঝরাতে সাহায্য করে?
ওজন কমাতে যে রীতিমতো কাঠখড় পোড়াতে হয় সকলকেই। খাওয়াদাওয়া নিয়ন্ত্রণ থেকে শরীরচর্চা— খেয়াল রাখতে হয় সব দিকেই। কিন্তু কেউ যদি আপনাকে বলেন ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে ওজন ঝরিয়ে ফেলা যায়, তার চেয়ে বড় সুখবর কি আর কিছু হতে পারে! ছেলেবেলায় মায়েরা বলতেন, বেশি ঘুমোলে নাকি মোটা হয়। তা হলে কোনটা ঠিক?
কী ভাবে?
পর্যাপ্ত ঘুম না হলে আপনার শরীরে মানসিক চাপের হরমোন— মানে কর্টিসলের ক্ষরণ বেড়ে যায়। বেশি মাত্রায় কর্টিসল শরীরে থাকলে তা আমাদের হজমশক্তির উপর প্রভাব ফেলে। শরীরের বিপাকহারও কমে যায় এই সব কারণে। বেশি রাত অবধি জেগে থাকলে উল্টোপাল্টা খাওয়ার প্রবণতা বেড়ে যায়। রক্তে শর্করা মাত্রা বেড়ে যেতে পারে এর ফলে। তাই ওজন বাড়তেও বেশি সময় লাগে না।
ঘুমের মধ্যেও কী করে ক্যালোরি ঝরাবেন?
১) আপনি যদি ওয়েট ট্রেনিং করেন, তা হলে তা সকালের বদলে সন্ধ্যাবেলা করতে পারেন। শরীরের বিপাকহার শরীরচর্চার পর ১৬ ঘণ্টা পর্যন্ত বেশি থাকবে। তাই ঘুমের মধ্যেও শরীরে ক্যালোরি বেশি খরচ হবে।
২) বেশির ভাগ মানুষই রাতে খাওয়াদাওয়ার পর ঘুমোতে চলে যান। সঙ্গে সঙ্গে না ঘুমোলেও বিছানায় গড়িয়ে ফোন ঘাঁটা শুরু হয়ে যায়। এই অভ্যাস ছাড়তে হবে। খাওয়ার পর অন্তত ঘণ্টা দুয়েক না ঘুমোনোই শ্রেয়। তাতে খাবার হজম ভাল হয়। বিপাকহারও বাড়ে। ফলে ঘুমের মধ্যে ওজন ঝরার কাজ শুরু হয়।
৩) শরীরচর্চা করার পর যদি ঠান্ডা জলে স্নান করতে পারেন, তা হলে শরীরে থেকে ল্যাকটিক অ্যাসিড বেরিয়ে যেতে সাহায্য করবে। আমাদের শরীরে ব্রাউন ফ্যাটের পরিমাণে খুব কম থাকে। কিন্তু এটি সক্রিয় থাকলে শরীরের বিপাকহার বেড়ে অনেক ক্ষণ পর্যন্ত ক্যালোরি ঝরতে পারে। ৩০ সেকেন্ড যদি বরফ-ঠান্ডা জলে স্নান করতে পারেন, তা হলে শরীরের ব্রাউন ফ্যাট সক্রিয় হয়ে ঘুমের মধ্যেও ৪০০ ক্যালোরি পর্যন্ত ঝরাতে পারে।
৪) গ্রিন টি শরীরের বিপাকহার বাড়াতে সাহায্য করে। দিনে যদি ৩ কাপ চা খান, তার মধ্যে শেষ কাপটি ঘুমের আগে— তা হলে ঘুমের মধ্যে ৩.৫ শতাংশ বেশি ক্যালোরি ঝরতে পারে। তাই রাতে খাওয়াদাওয়া ও ঘুমোনোর মাঝে এক কাপ গ্রিন টিতে চুমুক দিতেই পারেন।
৫) রাত জেগে মোবাইলে ওয়েব সিরিজ় দেখার অভ্যাস অনেকেরই আছে। এই অভ্যাসের কারণে রাতে তিন-চার ঘণ্টার বেশি ঘুম হয় না। ওজন বেড়ে যাওয়ার পিছনে কিন্তু এই অভ্যাস দায়ী। তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়ার অভ্যাস ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।