সোমবার , ২৫শে আগস্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ || ১০ই ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ - শরৎকাল || ২রা রবিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি

গুনাহের পর অনুতপ্ত বান্দার জন্য আল্লাহ তায়ালার সান্ত্বনা

প্রকাশিত হয়েছে- সোমবার, ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

নফস মানুষকে সবসময় গুনাহের দিকে ধাবিত করে। নফসের প্রচ্ছন্ন উস্কানিতে মানুষ পাপে জড়িয়ে পড়ে। স্বভাবজাতভাবে মানুষের নফসকে গুনাহের কাজগুলো সহজেই আকৃষ্ট করে। এবং পূণ্যের কাজগুলো নফসের কাছে কষ্টকর মনে হয়। এক হাদিসে রাসূলে করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, জাহান্নামকে ঘিরে রাখা হয়েছে আকর্ষণীয় কাজকর্ম দিয়ে আর জান্নাতকে ঘিরে রাখা হয়েছে নিরস কাজকর্ম দিয়ে। (বুখারি, হাদিস : ২৪৫৫)

নফসের সঙ্গে একজোট হয়ে শয়তান সবসময় মানুষকে বিপথে পরিচালিত করার পায়তারা খোঁজে। পবিত্র ইরশাদ হয়েছে, ‘আল্লাহ তাকে অভিশাপ করেন এবং সে বলে, আমি অবশ্যই আপনার বান্দাদের এক নির্দিষ্ট অংশকে আমার অনুসারী করে নেব। আমি তাদের পথভ্রষ্ট করবই।’ (সূরা নিসা, আয়াত : ১১৮-১১৯)

তবে মানুষকে শয়তান যত ধোঁকাতেই ফেলুক না কেন। ভুল বুঝে রবের পথে ফেরার চেষ্টা করলে আল্লাহ তায়ালা তাকে ক্ষমা করবেন কখনো নিরাশ করেন না। এবং তিনি ক্ষমাপ্রার্থী বান্দাদের প্রতি সবসময় অনুগ্রহশীল।

পবিত্র কোরআনে বর্ণিত হয়েছে,

وَ مَنۡ یَّعۡمَلۡ سُوۡٓءًا اَوۡ یَظۡلِمۡ نَفۡسَهٗ ثُمَّ یَسۡتَغۡفِرِ اللّٰهَ یَجِدِ اللّٰهَ غَفُوۡرًا رَّحِیۡمًا

আর কেউ কোন মন্দ কাজ করে অথবা নিজের প্রতি যুলুম করে পরে আল্লাহ্‌র কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করলে আল্লাহকে সে ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু পাবে। (সূরা নিসা, আয়াত : ১১০)

আয়াত থেকে জানা যায় যে, আল্লাহর হকের সাথে সম্পর্কযুক্ত সব গুনাহই তাওবা ও ইস্তেগফারের দ্বারা মাফ হতে পারে। তবে তাওবা ও ইস্তেগফারের স্বরূপ জানা জরুরি।

শুধু মুখে ‘আস্তাগফিরুল্লাহ ওয়া আতুবু ইলাইহি’ বলার নাম তাওবা ও ইস্তেগফার নয়। তাই আলেমগণ এ বিষয়ে একমত যে, গুনাহে লিপ্ত ব্যক্তি যদি সে জন্য অনুতপ্ত না হয় এবং তা পরিত্যাগ না করে কিংবা ভবিষ্যতে পরিত্যাগ করতে সংকল্পবদ্ধ না হয়, তবে মুখে মুখে ‘আস্তাগফিরুল্লাহ’ বলা তাওবার সাথে উপহাস ছাড়া কিছু নয়।

তাওবার জন্য মোটামুটি তিনটি বিষয় জরুরি।— ১. অতীত গুনাহের জন্য অনুতপ্ত হওয়া। ২. উপস্থিত গুনাহ অবিলম্বে ত্যাগ করা এবং ৩. ভবিষ্যতে গুনাহ থেকে বেঁচে থাকতে দৃঢ়সংকল্প হওয়া।

তাছাড়া বান্দাহর হকের সাথে যেসব গুনাহের সম্পর্ক, সেগুলো বান্দাহর কাছ থেকেই মাফ করিয়ে নেয়া কিংবা হক পরিশোধ করে দেয়া তাওবার অন্যতম শর্ত।