গাজায় ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদের সঙ্গে সংঘর্ষে ৩ ইসরায়েলি সেনা নিহত
গাজা ভূখণ্ডের উত্তরাঞ্চলে ফিলিস্তিনের যোদ্ধাদের সঙ্গে তীব্র সংঘর্ষে তিনজন ইসরায়েলি সেনা নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। নিহতদের সবার বয়স বিশের কোঠায়।

সোমবার (২ জুন) সন্ধ্যায় এই সংঘর্ষ ও প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। চলতি বছরের মার্চে প্রায় দুই মাসের যুদ্ধবিরতির অবসান ঘটিয়ে হামলা শুরুর পর এটিকেই ইসরায়েলি বাহিনীর ওপর সবচেয়ে প্রাণঘাতী হামলা বলে বিবেচনা করা হচ্ছে।
মঙ্গলবার (৩ জুন) পৃথক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স এবং সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।

রয়টার্স বলছে, গাজা উপত্যকার উত্তরাঞ্চলে লড়াইয়ে তিন ইসরায়েলি সেনা নিহত হয়েছে বলে মঙ্গলবার জানিয়েছে ইরায়েলের সেনাবাহিনী। এর আগে সোমবার হামাসের সশস্ত্র শাখার পক্ষ থেকে জানানো হয়, তাদের যোদ্ধারা উত্তরাঞ্চলে ইসরায়েলি বাহিনীর সাথে “মারাত্মক সংঘর্ষ” চালিয়ে যাচ্ছে। আর তার কয়েক ঘণ্টা পরেই ইসরায়েলি সৈন্যদের মৃত্যুর ঘোষণা দেওয়া হলো।

এদিকে গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলি হামলায় একদিনে কমপক্ষে আরও ৫২ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। ২০২৩ সালের অক্টোবরে গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযান শুরুর পর থেকে কমপক্ষে ৫৪ হাজার ৪৭০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
সোমবার প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ৫২টি মরদেহ হাসপাতালে আনা হয়েছে। একই সময়ে আহত হয়েছেন আরও ৫০৩ জন, ফলে মোট আহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ২৪ হাজার ৬৯৩ জনে।

চলতি বছরের জানুয়ারিতে যে যুদ্ধবিরতি ও বন্দি বিনিময়ের চুক্তি হয়েছিল, তা ১৮ মার্চে বাতিল করে ইসরায়েল আবার হামলা শুরু করে। এরপর থেকে গাজায় বিমান ও স্থলপথে হামলা আরও তীব্র হয়।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে, গত ১৮ মার্চ থেকে গাজায় নতুন করে শুরু হওয়া ইসরায়েলি বিমান হামলায় এখন পর্যন্ত ৪ হাজার ২০১ ফিলিস্তিনি নিহত এবং আরও ১২ হাজার ৬৫২ জন আহত হয়েছেন। ইসরায়েলের বর্বর এই হামলা চলতি বছরের জানুয়ারিতে কার্যকর হওয়া যুদ্ধবিরতি চুক্তি ভেঙে দিয়েছে।

জাতিসংঘের মতে, ইসরায়েলের বর্বর আক্রমণের কারণে গাজার প্রায় ৯০ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছিলেন। এছাড়া অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডের অধিকাংশ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে।
মূলত ইসরায়েলের আগ্রাসনে গাজার বিস্তীর্ণ অঞ্চল ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। এখন পর্যন্ত ৫৪ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। গাজার অধিকাংশ বাসিন্দা এখন অস্থায়ী শিবিরে মানবেতর পরিস্থিতিতে বসবাস করছেন।

অঞ্চলটির অনেক ভবন পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে এবং বিদ্যুৎ, পানি, ওষুধসহ জরুরি পরিষেবার মারাত্মক সংকট চলছে।