ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলি বিমান হামলায় নিহত হয়েছেন ১৪ বছর বয়সী ফিলিস্তিনি ফুটবলার মোহাম্মদ রামেজ আল-সুলতান। এ ঘটনায় তার পরিবারের আরও ১৪ জন প্রাণ হারিয়েছেন।
গত শুক্রবার হওয়া হামলায় তারা প্রাণ হারান। নিহত রামেজ আল-সুলতান বৈশ্বিক ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফা অনুমোদিত একাডেমির ফুটবলার ছিলেন। মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।
বার্তাসংস্থাটি বলছে, গাজা সিটির উত্তরে ইসরায়েলি বিমান হামলায় ফিলিস্তিনি কিশোর ফুটবলার মোহাম্মদ রামেজ আল-সুলতান (১৪) প্রাণ হারিয়েছেন। এ ঘটনায় তার পরিবারের আরও ১৪ জন সদস্যও নিহত হয়েছেন বলে সোমবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে ফিলিস্তিনি ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন।
সংস্থাটি জানায়, শুক্রবার আল-তুওয়াম এলাকায় আল-সুলতানের পরিবারের বাড়িতে ইসরায়েলি বাহিনী হামলা চালালে তিনি নিহত হন।
আল-হিলাল ক্লাব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে লিখেছে, ফিফা অনুমোদিত একাডেমির স্নাতক খেলোয়াড় ছিলেন আল-সুলতান। তিনি বাবা ও আত্মীয়দের সঙ্গে প্রাণ হারিয়েছেন। এ ঘটনায় তার সতীর্থ মালিক আবু আল-আমারেনের সঙ্গে তিনিও ‘শহীদদের কাতারে’ যুক্ত হলেন।
এর আগে গত ৬ সেপ্টেম্বর আল-হিলালের যুব খেলোয়াড় মালিক আবু আল-আমারেন গাজার উত্তরে মানবিক সহায়তার অপেক্ষায় থাকা অবস্থায় ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে নিহত হন।
আল-সুলতান ও তার পরিবারের মৃত্যু এমন সময় ঘটল, যখন ইসরায়েলি হামলায় গাজায় অনেকের পুরো পরিবার ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। এই হামলায় ক্রীড়াবিদ, সাংবাদিক, চিকিৎসক ও শিক্ষার্থীসহ সমাজের সব শ্রেণির মানুষ নিহত হচ্ছেন।
ফিলিস্তিনি ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট জিবরিল রাজুব গত ২৬ আগস্ট জানিয়েছিলেন, ইসরায়েলি আগ্রাসনে ফিলিস্তিনি ক্রীড়াঙ্গন অভূতপূর্ব বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে। এখন পর্যন্ত ৭৭৪ জন ক্রীড়া-সম্পর্কিত ব্যক্তির প্রাণহানি ঘটেছে। তাদের মধ্যে ৩৫৫ জন ফুটবলার, ২৭৭ জন অন্য ফেডারেশনের খেলোয়াড় ও ১৪২ জন স্কাউট। এছাড়া আরও ১১৯ জন নিখোঁজ রয়েছেন। নিহতদের মধ্যে ১৫ জন ক্রীড়া সাংবাদিকও আছেন। এ ছাড়া পশ্চিম তীর ও গাজায় ২৮৮টি ক্রীড়া অবকাঠামো সম্পূর্ণ বা আংশিক ধ্বংস হয়ে গেছে।
২০২৩ সালের অক্টোবরে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ইসরায়েলি হামলায় গাজায় প্রায় ৬৫ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। ভয়াবহ ধ্বংসযজ্ঞে পরিণত হওয়া এ ভূখণ্ড এখন দুর্ভিক্ষের মুখে। গাজায় চলমান যুদ্ধকে কেন্দ্র করে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে মামলা চলছে।