1. numanashulianews@gmail.com : kazi sarmin islam : kazi sarmin islam
  2. islamkazisarmin@gmail.com : newstv : Md newstv
  3. admin@newstvbangla.com : newstvbangla : Md Didar
কোয়ান্টাম প্রযুক্তিতে ৬৩ কোটি ডলার বিনিয়োগের ঘোষণা - NEWSTVBANGLA
বুধবার, ০২ জুলাই ২০২৫, ০৪:৫৭ অপরাহ্ন

কোয়ান্টাম প্রযুক্তিতে ৬৩ কোটি ডলার বিনিয়োগের ঘোষণা

প্রতিনিধি

ভবিষ্যৎ নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের পথ প্রশস্ত করতে কোয়ান্টাম কম্পিউটিং-এ ৫০ কোটি পাউন্ড বা প্রায় ৬৩ কোটি ডলার বিনিয়োগের ঘোষণা দিয়েছে ব্রিটিশ সরকার। কোয়ান্টাম ফিজিক্সভিত্তিক এই উদীয়মান প্রযুক্তিকে ঘিরে ব্রিটেনের উচ্চাকাঙ্ক্ষা এখন অনেকটাই পরিষ্কার। অর্থাৎ বিশ্বের শীর্ষ কোয়ান্টাম শক্তি হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠা করা।

বিশেষজ্ঞদের মতে, কোয়ান্টাম কম্পিউটিং কেবল দ্রুততর গণনার সম্ভাবনাই নয়। বরং জাতীয় নিরাপত্তা, অর্থনীতি, চিকিৎসা ও পরিবহন ব্যবস্থাতেও আমূল পরিবর্তন আনবে। এর মাধ্যমে সুপার কম্পিউটারের চেয়েও শক্তিশালী বিশ্লেষণ, সাইবার নিরাপত্তায় অপ্রতিরোধ্য এনক্রিপশন, মানবদেহের ভেতরের নিখুঁত চিত্রায়ন, এমনকি নতুন ধরনের ওষুধ উদ্ভাবনের পথ খুলবে।

ইনস্টিটিউট অব ফিজিক্সের প্রধান নির্বাহী টম গ্রিনিয়ার বলেন, “কোয়ান্টাম প্রযুক্তি মানবজাতির জন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কিংবা ইন্টারনেটের মতোই একটি যুগান্তকারী আবিষ্কার হয়ে উঠবে।”

২০২৩ সালে কনজারভেটিভ সরকার ১০ বছরে ২৫০ কোটি পাউন্ড বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। যদিও তা বাস্তবায়ন নিয়ে ছিল প্রশ্ন। তবে নতুন লেবার সরকার ক্ষমতায় আসার পর সেই পরিকল্পনার পর্যালোচনা শেষে আবারও এগিয়ে এসেছে নতুন অঙ্গীকার নিয়ে।

অক্সফোর্ড কোয়ান্টাম সার্কিটসের অন্তর্বর্তী প্রধান নির্বাহী জেরাল্ড মুল্যালি বলছেন, “জাতীয় নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য নিজস্ব কোয়ান্টাম সক্ষমতা গড়ে তোলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”

সরকারি কর্মকর্তারাও বলছেন, এই বিনিয়োগ কেবল গবেষণাতেই সীমাবদ্ধ থাকবে না—বরং এর মাধ্যমে ব্রিটেনের স্টার্টআপ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলোর স্বকীয়তা রক্ষা করা হবে। কারণ সম্প্রতি অক্সফোর্ড আয়নিকস ও অক্সফোর্ড ইনস্ট্রুমেন্টসের কোয়ান্টাম ইউনিট যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানির হাতে চলে যাওয়ার ঘটনায় দেশের উদ্ভাবনী সম্পদ বিদেশে চলে যাওয়ার ঝুঁকি স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।

যুক্তরাজ্যের গবেষকরা ইতোমধ্যেই বিভিন্ন খাতে কোয়ান্টাম প্রযুক্তির ব্যবহার শুরু করেছেন। কোয়ান্টাম সেন্সিং প্রযুক্তির মাধ্যমে লন্ডনের আন্ডারগ্রাউন্ড ট্রেনগুলোর চলাচল আরও নির্ভুলভাবে পর্যবেক্ষণের চেষ্টা চলছে। কোয়ান্টাম ইমেজিং ব্যবহার করে ডিমেনশিয়ার মতো জটিল রোগের প্রাথমিক লক্ষণ শনাক্ত করার সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে। চিকিৎসা, আবহাওয়া পূর্বাভাস এবং স্যাটেলাইট কমিউনিকেশনেও কোয়ান্টামের সম্ভাবনা নিয়ে কাজ চলছে।

ব্রিটেনের বিজ্ঞানমন্ত্রী লর্ড প্যাট্রিক ভ্যালান্স এর আগেই জানিয়েছেন, দেশের উদ্ভাবনী কোম্পানিগুলোকে যেন বিদেশি মালিকানার বদলে স্বতন্ত্রভাবে গড়ে তোলা যায়। সেই লক্ষ্যে সরকার নীতি ও আর্থিক সহায়তা দেবে। তাই এই বিনিয়োগ শুধু প্রযুক্তিতে নয়, একটি পূর্ণাঙ্গ কোয়ান্টাম ইকোসিস্টেম তৈরির দিকেই ইঙ্গিত করছে।

যদিও কোয়ান্টাম প্রযুক্তি এখনও বিকাশমান পর্যায়ে, তবুও যুক্তরাজ্যের এই বিপুল বিনিয়োগ নিঃসন্দেহে বৈশ্বিক প্রযুক্তি প্রতিযোগিতায় দেশের অবস্থান আরও শক্তিশালী করবে। একইসঙ্গে এটি স্পষ্ট করে দিচ্ছে যে, ভবিষ্যতের নেতৃত্বের দৌড়ে শুধু বড় বড় করপোরেশন নয়, রাষ্ট্রও নিজস্ব পদক্ষেপ নিচ্ছে প্রযুক্তির নিয়ন্ত্রণ নিজের হাতে রাখতে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2015
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: রায়তাহোস্ট