রবিবার , ২৪শে আগস্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ || ৯ই ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ - শরৎকাল || ১লা রবিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি

এনসিপির সাথে বৈঠক সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের : জনমনে নানা প্রশ্ন

প্রকাশিত হয়েছে- বৃহস্পতিবার, ৭ আগস্ট, ২০২৫

কক্সবাজারে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) শীর্ষ পাঁচ নেতার সঙ্গে গোপন বৈঠকের গুঞ্জনের মধ্যেই মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ঢাকা ত্যাগ করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার ডি. হাস। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তির দিনে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে কূটনৈতিক ও রাজনৈতিক অঙ্গনে তীব্র কৌতূহল ও জল্পনার জন্ম দিয়েছে।

বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) কর্তৃক প্রকাশিত ‘দোলনচাপা-ভিআইপি-২’ টার্মিনালের যাত্রী তালিকা থেকে এই তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে।

তালিকা অনুযায়ী, পিটার হাস হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ভিআইপি টার্মিনাল ‘দোলনচাপা’ ব্যবহার করে এমিরেটস এয়ারলাইন্সের EK 583 ফ্লাইটে ঠিক সন্ধ্যা ৭টা বেজে ১০ মিনিটে (১৯:১০ ঘটিকায়) ঢাকা ত্যাগ করেন। তালিকায় তার পরিচয়ের স্থানে ‘সাবেক রাষ্ট্রদূত’ (Ambassador-Ex) উল্লেখ করা হয়েছে।

এর আগে দিনের বেলায় পিটার হাসের সঙ্গে এনসিপির শীর্ষ নেতাদের বৈঠকের খবর ছড়িয়ে পড়ে। সূত্র জানায়, গতকাল মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে এনসিপির পাঁচ শীর্ষ নেতা ঢাকা থেকে কক্সবাজার পৌঁছান। এই নেতাদের মধ্যে ছিলেন দলের মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম, মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আবদুল্লাহ, মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, সিনিয়র যুগ্ম সদস্যসচিব তাসনিম জারা এবং সদস্য খালেদ সাইফুল্লাহ।

তারা কক্সবাজারের ইনানী বিচে অবস্থিত ‘সী পার্ল রিসোর্ট অ্যান্ড স্পা’ হোটেলে ওঠেন। দুপুরের পর থেকে রিসোর্ট প্রাঙ্গণে তাদের বিচরণের খবর পাওয়া যায় এবং এর পর থেকেই গুঞ্জন ওঠে যে তারা সেখানে পিটার হাসের সঙ্গে একটি গোপন বৈঠকে মিলিত হয়েছেন। তবে এ বিষয়ে হোটেল কর্তৃপক্ষ বা এনসিপির পক্ষ থেকে কোনো মন্তব্য করা হয়নি।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তির মতো একটি স্পর্শকাতর দিনে এনসিপির মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতাদের সাথে পিটার হাসের এই কথিত বৈঠক এবং বৈঠকের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই তার দেশত্যাগ—এই দুটি ঘটনাকে বিচ্ছিন্নভাবে দেখার সুযোগ কম।

পিটার হাসের সঙ্গে এনসিপি নেতাদের বৈঠকের উদ্দেশ্য কী ছিল এবং এর সঙ্গে তার দেশত্যাগের কোনো সম্পর্ক আছে কি না, সে বিষয়ে কোনো পক্ষই মুখ না খোলায় ধোঁয়াশা রয়েই যাচ্ছে। তবে এই ঘটনা আগামী দিনের রাজনীতিতে নতুন সমীকরণের ইঙ্গিত দিচ্ছে বলে মনে করছেন অনেকে।