রবিবার , ২৪শে আগস্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ || ৯ই ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ - শরৎকাল || ১লা রবিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি

এক চিকিৎসক ও ব্লাড ব্যাংকের সাহসী ভূমিকার প্রশংসা প্রেস সচিবের

প্রকাশিত হয়েছে- রবিবার, ১৩ জুলাই, ২০২৫

জুলাইয়ের রক্তাক্ত ঘটনার সময় আহতদের পাশে দাঁড়ানো এক চিকিৎসক ও ব্লাড ব্যাংকের সাহসী ভূমিকার প্রশংসা করেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। জুলাই বিপ্লবে নিরবে অসামান্য ভূমিকা রাখা সেই চিকিৎসকের নাম মুনাদি আল ইসলাম। আর আহতদের জন্য রক্তের জোগান নিশ্চিত করতে এগিয়ে আসা স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের নাম ‘রিদম ব্লাড ব্যাংক’।

রোববার (১৩ জুলাই) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে তিনি এই চিকিৎসক এবং ব্লাড ব্যাংকটিকে পরিচয় করিয়ে দেন।

স্ট্যাটাসে প্রেস সচিব বলেন, “রাজপথে যখন গুলির মুখে মানুষ লুটিয়ে পড়ছিল, তখন হাসপাতালের ভেতরে কেউ কেউ নীরবে যুদ্ধ চালিয়ে গেছেন। এই নিরব যোদ্ধারা ইতিহাসে আলাদা জায়গা পাওয়ার দাবিদার।”

তিনি জানান, গত বছরের ১৮ জুলাই নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানে যখন রাজধানীতে ব্যাপক প্রাণহানি ঘটে, তখন আহতদের রক্তের ঘাটতি মেটাতে ‘রিদম ব্লাড ব্যাংক’ নামে একটি ছোট সংগঠন এগিয়ে আসে। এছাড়াও কয়েকজন চিকিৎসক ও নার্স পরিচয় গোপন রেখে জীবন বাঁচাতে কাজ করেন।

শফিকুল আলম জানান, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সেই সময় জরুরি অস্ত্রোপচারের জন্য প্রয়োজনীয় রক্তের তীব্র সংকট দেখা দেয়। দেশের নামকরা কিছু ব্লাড ব্যাংক রক্ত দিতে অনাগ্রহ প্রকাশ করলেও ‘রিদম ব্লাড ব্যাংক’ নামের ছোট একটি প্রতিষ্ঠান ১৮ থেকে ২২ জুলাই পর্যন্ত ১২০০ ব্যাগ রক্তের ব্যবস্থা করে।

তিনি আরও জানান, সম্প্রতি ছেলেকে নিয়ে জাতীয় নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে গেলে তার দেখা হয় চিকিৎসক মুনাদি আল ইসলামের সঙ্গে, যিনি বিদ্রোহের সময় আহতদের সেবায় নিরবভাবে কাজ করেছেন।

ফেসবুক স্ট্যাটাসে প্রেস সচিব লেখেন, “মুনাদি আমাকে জানান, রক্তের সংকট মেটাতে কেউ কেউ নিজেদের পরিচয় লুকিয়ে রক্ত দিয়েছেন। এমনকি হিজড়া সম্প্রদায়ের কিছু মানুষও রক্ত দিতে ঢামেকে ছুটে আসেন।”

তিনি আরও উল্লেখ করেন, ঢাকা মেডিকেলের জরুরি বিভাগে তখন সাদা পোশাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের উপস্থিতি ছিল। চিকিৎসকদের ছবিও তুলতে দেওয়া হয়নি।

শফিকুল আলম লেখেন, “অনেক চিকিৎসক ও নার্স তখন কোনো স্বীকৃতি না চেয়ে, নিজেদের নিরাপত্তার ঝুঁকি জেনেও আহতদের পাশে দাঁড়ান। কেউ পিপিই খুলে সাধারণ পোশাকে ঢুকে চিকিৎসা দেন, যাতে ধরা না পড়েন। তারা শুধু জীবন বাঁচাতে চেয়েছেন।”

প্রেস সচিব মনে করেন, ইতিহাসের এই অংশ নিয়ে গণমাধ্যমে এখনই অনুসন্ধানী প্রতিবেদন হওয়া দরকার। তার ভাষায়, “এই সাহসী চিকিৎসক ও রক্তদাতাদের নাম-পরিচয় তুলে আনা উচিত। যেন ইতিহাসে তাদের ভূমিকা লিপিবদ্ধ হয়।”