রবিবার , ২৪শে আগস্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ || ৯ই ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ - শরৎকাল || ১লা রবিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি

উপমহাদেশের প্রখ্যাত গাইনোকোলজিস্ট অধ্যাপক টি এ চৌধুরী আর নেই

প্রকাশিত হয়েছে- রবিবার, ৯ মার্চ, ২০২৫

উপমহাদেশের প্রখ্যাত গাইনোকোলজিস্ট ও স্বাধীনতা পুরস্কারপ্রাপ্ত চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. টি এ চৌধুরী (তৌহিদুল আনোয়ার চৌধুরী) মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজিউন)। বার্ধক্যজনিত কারণে রোববার (৯ মার্চ) দুপুরে নিজ বাসায় শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।

অধ্যাপক ডা. টি এ চৌধুরীর পারিবারিক একটি সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। ওই সূত্র জানিয়েছে, দীর্ঘদিন ধরে অধ্যাপক ডা. টি এ চৌধুরী বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগছিলেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৭ বছর।

অধ্যাপক ডা. চৌধুরী ১৯৩৭ সালের ১০ অক্টোবর ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন। তার পৈতৃক নিবাস নোয়াখালী জেলার সেনবাগ উপজেলায়। তিনি ১৯৬০ সালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাস করেন এবং অনার মার্কসহ প্রথম স্থান অধিকার করেন। পরে তিনি লাহোরের কিং অ্যাডওয়ার্ড কলেজে ভর্তি হন। প্রথম বর্ষ পড়ার পর সরকারি বৃত্তি নিয়ে ইংল্যান্ডের রয়েল কলেজ অব সার্জনস অব এডিনবার্গ যান এবং সেখানে থেকে এফআরসিএস সম্পন্ন করেন। তৌহিদুল আনোয়ার চৌধুরী ১৯৬৫ সালে রয়েল কলেজ অব অবসটেট্রিশিয়ান অ্যান্ড গাইনোকোলজিস্ট থেকে এমআরসিওজি পাস করেন।

ডা. টি এ চৌধুরীর কর্মজীবন

তৌহিদুল আনোয়ার চৌধুরী দেশে ফিরে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজে চাকরির মাধ্যমে তার কর্মজীবন শুরু করেন। সেখানে তিনি ৬ বছর ছিলেন। এরপর চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে বদলি হন। ১৯৮০’র দশকে চৌধুরী তৎকালীন আইপিজিএমে (বর্তমানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়) যোগ দেন এবং ১৯৮৭ সালে এর পরিচালক হিসেবে নিয়োগ পান। ১৯৯৪ সালে তিনি সরকারি চাকরি থেকে অবসর গ্রহণ করেন।

সর্বশেষ তিনি বারডেম হাসপাতালে স্ত্রীরোগ ও প্রসূতিবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। চৌধুরী অবস অ্যান্ড গাইনোকোলজি সোসাইটি অব বাংলাদেশ’র প্রতিষ্ঠাতা মহাসচিব ও পরে সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন। এছাড়া তিনি এশিয়া অ্যান্ড ওশেনিয়া ফেডারেশন অব অবস অ্যান্ড গাইনোকোলজির ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং সাউথ এশিয়া ফেডারেশন অব অবস অ্যান্ড গাইনোকোলজির প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি ১৯৯১-১৯৯৩ সালে দুই বছর মেয়াদে বাংলাদেশ কলেজ অব ফিজিশিয়ানস অ্যান্ড সার্জনস এর সভাপতি ছিলেন।

ব্যক্তিগত নানা অর্জন

ছাত্রজীবনে চৌধুরী এমবিবিএস পরীক্ষায় প্রথম স্থান অর্জন করায় এটিসিও গোল্ড মেডেল পেয়েছিলেন। নেপালে স্নাতকোত্তর চিকিৎসক বাড়াতে কাজ করায় নেপালের রাজা তাকে সে দেশের সর্বোচ্চ পুরস্কার গোর্খা দক্ষিণ বাহু গোল্ড মেডেল প্রদান করেন। ২০১৭ সালে চিকিৎসা শাস্ত্রের গাইনোকোলজি এবং অবসটেট্রিক্সে অনন্য অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে স্বাধীনতা পুরস্কার প্রদান করে।