1. numanashulianews@gmail.com : kazi sarmin islam : kazi sarmin islam
  2. islamkazisarmin@gmail.com : newstv : Md newstv
  3. admin@newstvbangla.com : newstvbangla : Md Didar
উত্তেজনা কমানোর ওষুধ দিয়ে বের করা হয় কিশোরদের - NEWSTVBANGLA
বুধবার, ০২ এপ্রিল ২০২৫, ০৭:৩৮ পূর্বাহ্ন

উত্তেজনা কমানোর ওষুধ দিয়ে বের করা হয় কিশোরদের

প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১১ জুলাই ২০১৮ইং

সারা বিশ্বের নজর ছিল থাইল্যান্ডের থাম লুয়াং গুহায়। ১৭ দিন আটক থাকা ১৩ জনকে একে একে উদ্ধার করে আনলেন সাহসী ডুবুরিরা। গতকাল মঙ্গলবার কিশোরদের উদ্ধার শেষে ৯০ জন ডুবুরির প্রত্যেকে বেরিয়ে আসার পর আনন্দের বন্যা বয়ে যায় থাইল্যান্ডে। স্বস্তি প্রকাশ করেছেন বিশ্বের অনেক মানুষ।

কিন্তু উদ্ধারকারী ব্যক্তিরা বলছেন, কিশোরদের গুহা থেকে বের করে আনাটা ছিল বিপজ্জনক। তাঁদের শান্ত রাখতে উত্তেজনা প্রশমনকারী ওষুধ খাওয়ানো হয়েছিল। এরপর তাদের গুহা থেকে একে একে বের করে আনেন ডুবুরিরা।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, গতকাল থাইল্যান্ডের ১২ কিশোর ফুটবলার ও তাদের কোচকে দুর্গম থাম লুয়াং গুহা থেকে উদ্ধার করেন ডুবুরিরা। সেখানে ১৭ দিন অন্ধকারে আটকে ছিল তারা। সাঁতার জানত না। তাদের জীবনের শঙ্কা তৈরি হয়েছিল।

উদ্ধারের পর ১২ কিশোর ও তাদের কোচ এখন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাদের কোনো রকম সংক্রমণ হয়েছে কি না, তা দেখছেন চিকিৎসকেরা। এ ছাড়া তাদের মানসিক অবস্থা পর্যালোচনা করা হচ্ছে।

কিন্তু কীভাবে তাদের ওই দুর্গম গুহা থেকে বের করা হলো? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অভিযান ছিল জটিল। একদিকে যেমন শারীরিক সক্ষমতার দরকার ছিল, তেমনি প্রয়োজন ছিল মানসিক শক্তি। শিশুদের ওই পরিস্থিতিতে মানসিকভাবে শান্ত রাখতে ওষুধ দেওয়ার প্রয়োজন পড়েছিল।

থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী প্রাউত চান-ওচা বিষয়টি পরিষ্কার করে বলেছেন, কিশোরদের উদ্বেগনাশক ওষুধ দেওয়া হয়েছিল। তবে তারা অচেতন হয়নি।

ব্যাংককে এক সংবাদ সম্মেলনে থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তাদের ক্লোরোফর্ম দিয়ে অজ্ঞান করা হয়নি। ক্লোরোফর্ম দিলে তারা বাইরে এল কীভাবে? এটাকে বলা হয় অ্যাংসিওলাইটিক। যাতে তারা উত্তেজিত না হয়।

উদ্ধারকারী ব্যক্তিরা বলেন, সাধারণত একেক গুহায় বিভিন্ন ধরনের ঝুঁকি থাকে। যদি কেউ সমস্যা পড়ে, তবে সমুদ্রের মতো খোলা জায়গায় সাঁতার কাটার মতো এগোনো যাবে না। কারণ, কোথাও সরু এলাকা এসে গেলেই যাত্রাপথের সমাপ্তি ঘটবে। থাম লুয়াং গুহার কঠিন চ্যালেঞ্জ হলো যাত্রা শুরুর কাছাকাছি এলাকায় পানিতে ডুবে থাকা একটি পয়েন্ট যার উচ্চতা ৩৮ সেন্টিমিটার আর এটি মাত্র ৭২ সেন্টিমিটার প্রশস্ত।

কিশোরদের মাস্ক পরিয়ে ডুবুরিদের তত্ত্বাবধানে বের করে আনা হয়। কাদা-পানির মধ্যে যেভাবে ফ্ল্যাশলাইটের আলোও দেখা যায় না, এমন পরিস্থিতির মধ্যে মাথা ঠান্ডা রেখে সাবধানে শিশুদের বের করে এনেছেন তাঁরা।

উদ্ধারকারীদের কোয়ার্টারেন্ট হাসপাতালের ওয়ার্ডে রেখে বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে। তাদের চোখ, পুষ্টির মাত্রা, মানসিক অবস্থা, রক্তের নমুনা পরীক্ষা করা হবে।

শিশুদের কাচের দেয়ালের ভেতর আলাদা করে রাখা হয়েছে। এখনই পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হয়নি। তাদের নিউমোনিয়া বা ব্যাকটেরিয়াজনিত সমস্যা দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

চিয়াং রাইয়ের প্রচারচক্রহ হাসপাতালে এক সংবাদ সম্মেলনে এক চিকিৎসা কর্মকর্তা বলেন, প্রথমে উদ্ধার হওয়া আট শিশুর জ্বর, হালকা কাশি ও হৃৎস্পন্দন কম হচ্ছে। দুজনের ‘কেভ ডিজিজ’ নামে ফুসফুসে সংক্রমণ দেখা গেছে।

উদ্ধারকারী ব্যক্তিরা বলেছেন, ‘গুহায় সব ধরনের রোগের আশঙ্কা থাকে। সেখানে বাদুড়, দূষিত পানি থেকে রোগ ছড়ায়। গুহার সবকিছুই ময়লা। মূত্র, রক্ত আর ত্বকের নমুনা রোগ দেখা যায়। ছত্রাকনাশক দিয়ে চিকিৎসা করা হয়।

চিকিৎসকেরা বলছেন, এক সপ্তাহের বেশি সময় তাদের হাসপাতালে থাকতে হবে। তবে তারা যেহেতু শিশু, তারা সুস্থ হয়ে উঠবে। সবাই বের হয়ে আসতে পেরে আনন্দিত।

চিকিৎসকেরা বলছেন, তারা খুব ক্ষুধার্ত। সব ধরনের খাবার খেতে চাইছে। তবে তারা যে খাবার হজম করতে পারবে, শুধু তা-ই দেওয়া হচ্ছে। তারা উঠে দাঁড়াতে ও খেতে পারছে। চিন্তার কিছু নেই। তারা রুটি ও চকলেট চাইছে। তারা ফুটবলার এবং তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ভালো।

গত ২৩ জুন থেকে এ পর্যন্ত থাইল্যান্ডের চিয়াং রাই শহরের ন্যাশনাল পার্ক লাগোয়া জঙ্গলাকীর্ণ পাহাড়ি এলাকার থাম লুয়াং নাং নন গুহায় আটকা পড়ে ছিল ১২ কিশোর ফুটবলার আর তাদের ২৫ বছর বয়সী কোচের দলটি।

টানা নয় দিনের চেষ্টায় তাদের কাছে পৌঁছানোর পর আরও ছয় দিন পর দলটিকে বের করে আনাতে চূড়ান্ত অভিযান শুরু করে উদ্ধার কর্তৃপক্ষ।

এত দিনেও উদ্ধার না করতে পারার মূল কারণ ছিল টানা বৃষ্টিতে গুহার ভেতর সৃষ্ট তীব্র স্রোতের বন্যা আর গুহার গিরিপথের প্রতিকূল গঠন।

উদ্ধারকারীদের চিয়াং রাই হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। সর্বশেষ উদ্ধারকারীকেও ওই হাসপাতালে নিতে দেখা গেছে। তাদের চিকিৎসা দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী।

সাহসী এই অভিযানের মাধ্যমে সবাইকে নিরাপদে উদ্ধার করায় উদ্ধারকাজে যুক্ত ব্যক্তিদের অভিনন্দন জানিয়েছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে। এ ছাড়া উদ্ধারকর্মীদের প্রশংসা করেছেন জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, স্পেনের রাজপরিবার, ভুটানের প্রধানমন্ত্রী টেসরিং টোবগে, প্রযুক্তিবিদ এলন মাস্কসহ অন্যরা।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2015
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: রায়তাহোস্ট