ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বেশি হলে এই ৫ খাবার এড়িয়ে চলুন
ইউরিক অ্যাসিড একটি প্রাকৃতিক বর্জ্য পদার্থ যা শরীরে পিউরিন ভেঙে গেলে তৈরি হয়। এটি ডাল, পালং শাকের মতো নির্দিষ্ট খাবারে পাওয়া যায় এবং আমাদের কিডনি দ্বারা প্রাকৃতিকভাবে উৎপাদিত হয়। সাধারণত ইউরিক অ্যাসিড রক্তে দ্রবীভূত হয়, কিডনির মধ্য দিয়ে যায় এবং প্রস্রাবে নির্গত হয়। কিন্তু যদি শরীরে খুব বেশি ইউরিক অ্যাসিড থাকে এবং কিডনি তা অপসারণ করতে না পারে, তাহলে এটি হাইপারইউরিসেমিয়া নামক একটি অবস্থার সৃষ্টি করে, যা গেঁটেবাত বা কিডনিতে পাথরের সৃষ্টি করে।
ইউরিক অ্যাসিড কেন গুরুত্বপূর্ণ?
ইউরিক অ্যাসিড একটি স্বাভাবিক বর্জ্য পণ্য যা শরীরে পিউরিনের ভাঙনের অংশ হিসাবে ঘটে। যদি এর মাত্রা খুব বেশি হয়, তাহলে এটি জয়েন্টে ধারালো স্ফটিক তৈরি করে। সেখান থেকে গেঁটেবাত নামক রোগ সৃষ্টি করে। ইউরিক অ্যাসিড নিয়ন্ত্রণে খাদ্য গুরুত্বপূর্ণ। কিছু খাবার বাদ দিলে তা ফ্লেয়ার-আপ কমাতে এবং দীর্ঘমেয়াদী জয়েন্টের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে সাহায্য করে।
১. অর্গান মিট
অর্গান মিটে খুব বেশি পিউরিন থাকে। এই পদার্থগুলো ইউরিক অ্যাসিডে দ্রবীভূত হয় এবং রক্তে এর মাত্রা বাড়ায়। নিয়মিত অর্গান মিট খাওয়ার ফলে গেঁটেবাতের ব্যথা হয়। যাদের ইউরিক অ্যাসিডের পরিমাণ বেশি, তাদের ব্যথা এবং অস্বস্তি এড়াতে এ ধরনের খাবার সম্পূর্ণরূপে এড়িয়ে চলতে হবে।
২. পনির এবং ফুল ফ্যাট ডেইরি প্রোডাক্ট
যদিও এগুলো নিরামিষ খাবার, তবে পনির এবং দুধের মতো ফুল ফ্যাট ডেইরি পণ্যতে স্যাচুরেটেড ফ্যাট থাকে। স্যাচুরেটেড ফ্যাট কিডনির ইউরিক অ্যাসিড নির্মূল করার সক্ষমতা কমিয়ে দেয়। প্রোটিন এবং ক্যালসিয়ামের প্রয়োজনীয়তা পূরণ করার সময় ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করার জন্য কম চর্বিযুক্ত বা চর্বিহীন দুগ্ধজাত পণ্য বেছে নিন।
৩. সামুদ্রিক খাবার
কিছু সামুদ্রিক খাবারে স্বাভাবিকভাবেই পিউরিন বেশি থাকে। তাই যাদের উচ্চ ইউরিক অ্যাসিড রয়েছে তাদের জন্য এগুলো নিরাপদ নয়। নিয়মিত সেসব মাছ খাওয়ার ফলে ইউরিক অ্যাসিড জমা হতে পারে এবং গেঁটেবাতের আক্রমণ হতে পারে। আপনি যদি ইউরিক অ্যাসিডের সমস্যায় ভুগে থাকেন, তাহলে সামুদ্রিক খাবার পরিমিত পরিমাণে খাওয়া উচিত।
৪. চিনিযুক্ত পানীয়
অতিরিক্ত চিনিযুক্ত পানীয়, বিশেষ করে ফ্রুক্টোজযুক্ত পানীয়, ইউরিক অ্যাসিডের উৎপাদন বাড়িয়ে দিতে পারে। ফ্রুক্টোজ শরীরে পিউরিনের বিপাক ক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করে, যার ফলে ইউরিক অ্যাসিড বেশি হয়। চিনিযুক্ত কোল্ড ড্রিংকস এবং জুসের পরিবর্তে পানি বা মিষ্টি ছাড়া পানীয় পান করার অভ্যাস করুন।
৫. পরিশোধিত কার্বোহাইড্রেট
সাদা রুটি, পাস্তা এবং চিনিযুক্ত পেস্ট্রির মতো খাবারে ফাইবার কম থাকে। এগুলো দ্রুত রক্তে শর্করার মাত্রা বৃদ্ধি করে ও পরিশোধিত কার্বোহাইড্রেট ইনসুলিন প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। যা কিডনির ইউরিক অ্যাসিড নির্মূল করার ক্ষমতা হ্রাস করে।