1. numanashulianews@gmail.com : kazi sarmin islam : kazi sarmin islam
  2. islamkazisarmin@gmail.com : newstv : Md newstv
  3. admin@newstvbangla.com : newstvbangla : Md Didar
আ.লীগ নেতার জামিন না দেওয়ায় বিচারককে হেনস্তা বিএনপিপন্থি আইনজীবীদের - NEWSTVBANGLA
রবিবার, ১৮ মে ২০২৫, ১০:০১ অপরাহ্ন

আ.লীগ নেতার জামিন না দেওয়ায় বিচারককে হেনস্তা বিএনপিপন্থি আইনজীবীদের

প্রতিনিধি

হত্যাচেষ্টা ও চাঁদা দাবির মামলায় আসামিকে জামিন না দেওয়ায় বিচারককে আওয়ামী লীগের ‘দোসর’ তকমা দিয়েছেন বিএনপিপন্থি কয়েকজন আইনজীবী। করেছেন গালিগালাজও।

ঢাকার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. জুনাইদের আদালতে শনিবার (১৭ মে) দুপুরে এ ঘটনা ঘটে।

জানা গেছে, কেরাণীগঞ্জ মডেল থানার একটি হত্যাচেষ্টা মামলার আসামি হানিফ মেম্বার গত ১২ মে আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন। বিচারক ওই আবেদন নাকচ করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। গত বৃহস্পতিবার তার জামিন চেয়ে আবেদন করেন আইনজীবী। শনিবার ওই আবেদনের শুনানি নিয়ে বিচারক আদেশ দেওয়ার পর গালিগালাজের ঘটনা ঘটে।

সংশ্লিষ্ট আদালতের বেঞ্চ সহকারী আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘কেরানীগঞ্জ মডেল থানার হত্যাচেষ্টা মামলায় হানিফ মেম্বার নামে এক আসামির জামিন শুনানির দিন ধার্য ছিল। খোরশেদ আলমসহ কয়েকজন আইনজীবী জামিন শুনানি করলে আদালত তা নামঞ্জুর করেন। পরে আইনজীবীরা স্যারের সঙ্গে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান। ফ্যাসিবাদের দোসর, দালাল বলেন। আদালতের কজলিস্ট ছুড়ে ফেলে দেন।’

তিনি বলেন, ‘স্যার জামিন নামঞ্জুরের অর্ডার দেন। তখন আইনজীবীরা বিষয়টা পুনর্বিবেচনার আবেদন করেন। স্যার বলেন, অর্ডার তো দিয়ে দিয়েছি। যদি আবার শুনানি করতে চান তাহলে সিজেএম (চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট) স্যারের কাছে স্পেশাল পুট আপ দিতে পারেন। প্রয়োজনে আমি আবার শুনবো। কিন্তু তারা তা না করে শুনানি করতে জোরাজুরি করেন। স্যার বলেন, প্রকাশ্য আদালতে জামিন নামঞ্জুর হয়েছে। তারা স্যারের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন, হুমকি দেন।’

এই বিষয়ে বিচারকের সঙ্গে আসামিপক্ষের আইনজীবীদের একটি কথোপকথনের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। সেখানে সিনিয়র আইনজীবী খোরশেদ আলম বিচারককে বলছেন, ঘটনার তারিখ, সময়, ঘটনাস্থল সেইম। দুইটা মামলা, এটা হয় না কি? এরপর তিনি এজলাস ত্যাগ করেন।

তবে কয়েকজন আইনজীবী আদালতে ছিলেন। এসময় আবদুল খালেক মিলন নামে এক আইনজীবী উচ্চস্বরে বলেন, ‘আমরা যে আজকে কথা বলি, যদি ৫ আগস্ট সরকার ফল্ট না করতো আমরা গুম হতাম, খুন হতাম। আমরা সিএমএম কোর্টে রাজনীতি করেছি। ৮০ বছরের একজন লোক স্যারেন্ডার করেছে।’ এসময় আরেক আইনজীবী বলেনন, আমরা শুনানি করে চলে গেছি। উনি (বিচারক) জিআরও (আদালতের সাধারণ নিবন্ধন শাখার কর্মকর্তা) কে বলেন, আপনি ভয় পেয়েছেন। আমরা কি এখানে ভয়ের কিছু করেছি?

আবদুল খালেক মিলন বলেন, ‘শোনেন স্যার, বলতে তো এখন খারাপ শোনা যায়, আমাদের কারণে আজ এই চেয়ারে বসা আপনি। নইলে আপনি এখানে থাকতে পারতেন না। আমরা যে কষ্ট করছি গত ১৭ বছর। ৪ আগস্টের ঘটনা সিসিটিভি ফুটেজে দেখেন। অন্যায় কোনো আবদার করিনি। ৫ আগস্টের পর আজ পর্যন্ত কোনো কোর্টে তদবির করিনি। সবাই বলছে, আমি বলছি না। আমি যাই না।’

তখন আইনজীবীরা বলেন, ‘আমরা পুনরায় জামিনের একটা আবেদন করি। আপনি কালকে শুনানির জন্য রাখেন।’

বিচারক বলেন, ‘আপনার স্পেশাল পুটআপ নিয়ে সিজেএম স্যারের কাছে যান।’

এরপরও আইনজীবী বলেন, আপনি কালকে একটা ডেট রাখেন। তাহলে আমরা বাঁচতে পারি। না হলে আমরাও বাঁচতে পারি না। কাল শুনানির জন্য রাখেন। বাদীকে নিয়ে আসবো। এসময় শোনা যায়, যান যান। তখন এক আইনজীবী ধমকের সুরে বলেন, চুপ। তারা বিচারককে বলেন, এ আওয়ামী লীগের দালাল। পরে বিচারককে গালিগালাজ করেন।

এ বিষযে আবদুল খালেক মিলন বলেন, ‘বৃহস্পতিবার আমরা হানিফের জামিন আবেদন করি। শনিবার শুনানির জন্য ছিল। শুনানির পর জামিন নামঞ্জুর হয়। আমরা চলে আসি। পরে জিআরওকে ধমকান। বলেন, আপনি কি ভয় পান জামিনের বিরোধিতা করতে। জিআরও আমাদের সাপোর্ট করেছে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা বলি নেগেটিভ (জামিন নামঞ্জুর) কিছু হলে রিকলের আবেদন করি। উনি শোনেননি। পিটিশন রাখেননি। উল্টো জিআরওকে ধমকান।’

মামলার বাদী ফজলুল হক বলেন, ‘হানিফ মেম্বার আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। ১৫ বছর নির্বাচন ছাড়া শাক্তা ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডের মেম্বার ছিল। লোকজন নিয়ে জমি দখল করতো। সে নৌকা বাইতো। বৃষ্টি নামলে ঘরে থাকতে পারতো না, ভিজে যেত। এখন সে কয়েক হাজার কোটি টাকার মালিক। বহু মানুষের জমি দখল করছে। জালিয়াতি করে মসজিদের জমিও রেজিস্ট্রি করে বিক্রি করছে। এক পাগলে ২৪ শতাংশ জমি জাল করে বিক্রি করছে। তিতাস গ্যাসের লাইন এনে দেবে বলে হাজার হাজার লোকের কাছ থেকে এক লাখ/দেড় লাখ করে টাকা নিয়েছে। অবৈধ গ্যাসের লাইন এনে দিয়েছিল। তবে কিছুদিন পরে তিতাস এসে লাইনের গ্যাস কেটে দেয়। আমি হজে থাকাবস্থায় আমার বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা দেয়। আরও দুইটা মামলাও করে।’

তিনি বলেন, ‘আমার দুইটা প্লট। একটা প্লট জেসমিন নামের একজনের কাছে বিক্রি করেছি আরেকটিতে আমি আছি। জেসমিন ধানমন্ডিতে থাকা। তার বাড়ি-ঘর ভাঙচুর করে, সবকিছু লুটপাট করে নিয়ে যায়। আমার জমি দখলের চেষ্টা করে, কেয়ারটেকারকে মারধর করে। তার স্ত্রীকে শ্লীলতাহানি করে। আমি মামলা করছি। হানিফ জেলে থেকে মামলা তুলে নিতে হুমকি দিচ্ছে। আগে একদিন কোর্টে গিয়ে জামিনের বিরোধী করি। উকিলরাও হুমকি দিয়েছে। দাঁড়াইতে পারিনি। মন্ত্রীর চেয়ে তার প্রভাব বেশি। কেরানীগঞ্জ কামরুল সাহেব এর ১০ ভাগের দুই ভাগও প্রভাব দেখাতেন না। ও যা দেখায়।’

গত ৬ মে ফজলুল হক হানিফ মেম্বারসহ ১০ জনের নাম উল্লেখ করে এবং ৭০-৮০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলা দায়ের করেন।

মামলায় অভিযোগ করা হয়, কেরাণীগঞ্জ মডেল থানার শাক্তা ইউনিয়নের আরশিনগরে ১৩ শতাংশ জমির ওপর বাড়ি করেন। তবে আসামিরা জমিটি দখলের পাঁয়তারা করছে। গত ২৫ ও ২৭ জানুয়ারি তাকে আসামিরা গালিগালাজ করেন এবং জমিটি ছেড়ে দিতে বলেন। জমি না ছাড়লে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। ২৯ জানুয়ারি তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন ফজলুল হক। গত ৫ মে তারা ফজলুল হকের বাড়িতে গিয়ে ভাঙচুর চালায়। তার কেয়ারটেকারকে হত্যার উদ্দেশ্যে হাত পা বাঁধে। তখন তার স্ত্রী এগিয়ে আসে। আসামিরা তাকে শ্লীলতাহানি করে। ফজলুল হকের বাড়ির দেয়াল ভেঙে ফেলে। জিনিসপত্র লুটপাট করে নিয়ে যায়। এতে ১০/১১ লাখ টাকা ক্ষতি হয়। এসময় আসামিরা এক কোটি টাকা চাঁদাও দাবি করে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2015
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: রায়তাহোস্ট