বিদ্যুৎ আমদানিতে ভারতের আদানি গ্রুপের সঙ্গে বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের চুক্তিতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) পাশ কাটিয়ে শুল্ক ও কর অব্যাহতির মাধ্যমে সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকা ‘ফাঁকি’র অভিযোগ আমলে নিয়ে এবার অনুসন্ধান শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
এ চুক্তির জন্য সাবেক মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউস (চুক্তির সময় বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সচিব ছিলেন) ও তার নেতৃত্বাধীন কর্তৃপক্ষ এবং বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানে নথিপত্র তলব করেছে অনুসন্ধান কর্মকর্তা উপপরিচালক রেজাউল করিম।
বিষয়টি নিশ্চিত করে দুদকের উপপরিচালক মো. আকতারুল ইসলাম বলেন, চুক্তির আদ্যোপান্ত জানতে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের কাছে ৪ ধরনের তথ্য চেয়ে চিঠি দিয়েছে দুদক।
ওই চিঠিতে বলা হয়, ড. আহমেদ কায়কাউস, সাবেক বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সচিব ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের বিরুদ্ধে এনবিআরকে পাশ কাটিয়ে আদানির সঙ্গে চুক্তি করে সরকারের সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকা শুল্ক ফাঁকির অভিযোগ রয়েছে। উপর্যুক্ত অভিযোগের সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে রেকর্ডপত্র প্রয়োজন।
যেসব নথি চাওয়া হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে -আদানি গ্রুপের সাথে বিদ্যুৎ ক্রয়ের চুক্তির শুরু হতে শেষ অবধি যাবতীয় রেকর্ডপত্রের সত্যায়িত ফটোকপি, আদানি গ্রুপের সঙ্গে বিদ্যুৎ ক্রয়ের ক্ষেত্রে সরকারি নিয়ম অনুসরণ করা হয়েছে কিনা— এ সংক্রান্ত রেকর্ড, বিদ্যুৎ ক্রয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা/কর্মচারীদের নাম, পদবি, বর্তমান ঠিকানা ও মোবাইল নম্বর ও বর্ণিত বিষয়ে কোনো বিভাগীয় তদন্ত করা হয়েছে কিনা, হয়ে থাকলে তদন্ত প্রতিবেদনসহ বিস্তারিত তথ্যাদি/রেকর্ডপত্রাদি।
এর আগে অনুসন্ধানে নেমে আদানির বিদ্যুৎ আমদানিতে প্রায় ৪০ কোটি ডলারের শুল্ক ‘ফাঁকির’ প্রমাণ পায় এনবিআর; বহুল আলোচিত এ চুক্তির সময় সংশ্লিষ্ট সংস্থাকে পাশ কাটিয়ে শুল্ক ও কর অব্যাহতি দেওয়ার তথ্যও উঠে এসেছে সংস্থাটির তদন্তে।
২০২৩ সালের ৯ মার্চ ঝাড়খণ্ডের গড্ডায় স্থাপিত আদানির বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিট থেকে বিদ্যুৎ আমদানি শুরু করে বাংলাদেশ। তখন থেকেই আমদানি করা এ বিদ্যুতের শুল্কসহ অন্যান্য কর পরিশোধ করা হয়নি।