উত্তর বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে তলিয়ে গেছে ভোলার অর্ধশতাধিক নিম্নাঞ্চল। পানিবন্ধি হয়ে পড়েছে লাখো মানুষ। জোয়ারের পানি বিপৎসীমার ১৪৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে আতঙ্কিত নদী-তীরবর্তী ও বেড়িবাঁধের বাইরে বসবাসকারী বাসিন্দারা। তবে বেড়িবাঁধগুলো শঙ্কামুক্ত বলে জানিয়েছে পাউবো।
স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নিম্নচাপের প্রভাবে শুক্রবার (২৫ জুলাই) দুপুর থেকে জোয়ারের পানি বাড়তে শুরু করলে দুপুর ৩টা নাগাদ তলিয়ে যায় মনপুরার উপজেলার বিচ্ছিন্ন কলাতলি চর, চরফ্যাশন উপজেলার ঢালচরের অধিকাংশ গ্রাম, ভোলা সদর, দৌলতখান, বোরহানউদ্দিন, তজুমদ্দিন ও লালমোহনের অন্তত অর্ধশতাধিক গ্রাম। তবে সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছেন বেড়িবাঁধের বাইরে ও চরাঞ্চলে বসবাসকারী বাসিন্দারা।
মনপুরার কলাতলি চরের বাসিন্দা মুফতি আরিফুল ইসলাম বলেন, দুপুর ২টায় জুমার নামাজ শেষে মসজিদ থেকে বেরিয়ে দেখি পথঘাট স্থানীয় বাজারসহ সবকিছু তলিয়ে গেছে। পরে পানির ভেতর দিয়ে বাড়ি গিয়ে দেখি আমার বসতঘরের ভেতরে হাঁটুর ওপরে পানি। বিকেল ৫টা থেকে পানি নামতে শুরু করেছে। তবে এখনো আশপাশ সব তলিয়ে রয়েছে। রাতের জোয়ারের পানি কতটুকু হবে সে বিষয়ে আমাদের কোনো ধারণা নেই। কলাতলি চরের কয়েক হাজার মানুষ আজ রাতে আমরা না খেয়ে থাকতে হবে, রান্নার চুলা পানিতে তলিয়ে আছে।
চরফ্যাশনের ঢালচরের বাসিন্দা মো. আলাউদ্দিন বলেন, জোয়ারের পানি আমাদের স্থানীয় আনন্দ বাজারের সমান সমান হয়ে আছে। নিম্নাঞ্চল তলিয়ে গেছে। তবে বিকেল থেকে পানি নামতে শুরু করেছে।
সন্ধ্যায় ভোলা আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়া পর্যবেক্ষক মো. মনিরুজ্জামান বলেন, উত্তর বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিন্মচাপটি দুপুর ৩টার দিকে বাংলাদেশ অতিক্রম করেছে। আগামী পাঁচ দিন বৃষ্টি ও ঝোড়োবৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। একইসঙ্গে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত চলছে। এ ছাড়া মাছ ধরার সব নৌকা ও ট্রলারকে উপকূলের কাছাকাছি থাকতে বলা হয়েছে।
ভোলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (পুর) মোহাম্মদ হাসানুজ্জামান বলেন, ভোলায় আমাদের ৩৫১ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ সুরক্ষিত রয়েছে। দুপুর আড়াইটার দিকে তজুমুদ্দিন পয়েন্টে জোয়ারের পানি বিপৎসীমার ১৪৭ সেন্টিমিটার ও দৌলতখানে ৭৭ সেন্টিমিটার উপরে ছিল। পানি নেমে যাচ্ছে।
এদিকে বৈরী আবহাওয়ায় নদী উত্তাল থাকায় গতকাল থেকে ভোলার ১০টি নৌরুটে যাত্রীবাহী নৌযান চলাচল বন্ধ রয়েছে, এ ছাড়া শুক্রবার দুপুর থেকে ভোলা-লক্ষীপুর রুটে ফেরি চলাচল বন্ধ রয়েছে।