নেত্রকোণায় পূর্ব শত্রুতার জেরে কুপিয়ে হত্যা করার দায়ে রাজা মিয়া (২২) একজনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি আরো ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড করা হয়েছে। মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) বিকেলে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. হাফিজুর রহমান এই রায় দেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত রাজা মিয়া নেত্রকোণার মোহনগঞ্জ উপজেলার বানিয়াজুরা গ্রামের মো. ফয়েজ উদ্দিনের ছেলে। এছাড়া অভিযুক্ত আরো তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত না হওয়ায়,তাদের বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে।
আদালত ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ২০০৯ সালের ২১ জুন বিকেল আনুমানিক ৫টা আনোয়ারুল ইসলাম ওরফে আনোয়ার নামাজ পড়ার উদ্দেশ্যে পুকুর পাড়ে বসে অজু করছিলেন। ওই সময় তাকে দেখে রাজা মিয়া তার হাতে থাকা ‘দা’ দিয়ে আনোয়ারের ঘাড়ে কোপ দেয়।
ঘাড়ে কোপ খাওয়ার পর আনোয়ার দৌড়ে তার বাড়ির দিকে যেতে চাইলে আরেক আসামি ইছব মিয়া (২৭) আনোয়ারকে ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলে দেয়। তখন পুনরায় রাজা মিয়া তার হাতে থাকা ‘দা’ দিয়ে কুপিয়ে পিটের ডান পাশে যখম করে। ওই সময় পুনরায় আনোয়ার বাড়ির দিকে আসতে চাইলে অপর আসামি শফিকুল ইসলাম (৩০) তার হাতে থাকা ‘দা’ দিয়ে খুন করার উদ্দেশ্যে কোপ দিলে আনোয়ার হাত দিয়ে তা ফেরাতে গেলে তার বাহুতে লেগে যখম হয়।
এমতবস্থায় আনোয়ার চিৎকার করলে আশপাশের লোকজন তাকে উদ্ধার করে মোহনগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এ নিয়ে যায়। হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তার অবস্থা আশঙ্কাজনক দেখে উন্নত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পরদিন ২২ জুন রাতে আনোয়ারুলের মৃত্যু হয়। আনোয়ার মারা যাওয়ার পর তার বাবা মো. ফজলুল করিম (৫৫) ২০০৯ সালের ২৩ জুন বাদী হয়ে মোহনগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি হিসেবে ছিলেন, পাবলিক প্রসিকিউটর মো. আবুল হাশেম এবং আসামিপক্ষের আইনজীবী হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অ্যাডভোকেট নজরুল ইসলাম খান।
মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি পাবলিক প্রসিকিউটর মো. আবুল হাশেম বলেন, নেত্রকোণা জেলা দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহনগঞ্জের একটি হত্যা মামলায় আসামি মো. রাজা মিয়াকে ৩০২ ধারায় মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেয়। এটি একটি পুরনো মামলা। ২০০৯ সালে এটি মোহনগঞ্জ থানায় রুজু হয়েছিল।