সাফল্যের রঙে বছরের শেষটাও রাঙাতে পারবেন সাকিবরা?

অনেক প্রশ্ন। নানা কৌতুহল। জল্পনা-কল্পনা। একসঙ্গে টেস্ট, ওয়ানডে আর টি-টোয়েন্টি সিরিজ বিজয়ের অনন্য কৃতিত্ব বা ‘ট্রিপল ক্রাউন’ পাবে এবার বাংলাদেশ? ওয়েস্ট ইন্ডিজের মত প্রতিষ্ঠিত শক্তির বিপক্ষে তিন ফরম্যাটে প্রথম সিরিজ বিজয়ের উৎসবে মেতে উঠতে পারবেন টাইগাররা?
আহামরি কোন কঠিন কাজ নয়। এই মিশন সফল করতে চাই আর একটি মাত্র জয়। আজ (শনিবার) রাতে ক্যারিবীয়দের হারাতে পারলেই ব্যাস, ২-০’তে টেস্ট আর ২-১’এ ওয়ানডের পর ২-১ ব্যবধানে টি-টোয়েন্টি সিরিজও জয় হবে সাকিব, তামিম, মুশফিক, মাহমুদউল্লাহ, মিরাজ ও মোস্তাফিজদের।
তারা কি তা পারবেন তা করতে? সাফল্যের রঙ্গিন মোড়কে রাঙ্গিয়ে দেয়া যাবে কি ২০১৮ সালের শেষটাকেও?
বছর শুরু হয়েছিল শেরে বাংলায় জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়ানডে ম্যাচে ৮ উইকেটের দারুণ এক জয় দিয়ে। সেটা ছিল দেশের মাটিতে তিন জাতি আসর। বাঁ-হাতি ওপেনার তামিম ইকবাল ৯৩ বলে ৮৪ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেললেও বল ও ব্যাট হাতে দারুণ পারফরমেন্সে ম্যাচ সেরার পুরস্কার উঠেছিল সাকিব আল হাসানের হাতে। ৪৩ রানে তিন উইকেট ও ৪৬ বলে ৩৭ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলে ম্যাচ সেরা হয়েছিলেন সাকিব।
১৫ জানুয়ারি প্রথম ম্যাচটি অনায়াসে জেতার মাত্র ৭২ ঘন্টা পর আবারো সাকিব ‘ম্যাজিক’। ব্যাট ও বলে সমানভাবে জ্বলে উঠে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে রেকর্ড ১৬৩ রানের বিরাট জয়ের রূপকার হন সাকিব। তিন নম্বরে খেলতে নেমে ৬৩ বলে ৬৭ আর ৪৭ রানে ৩ উইকেট দখল করে লঙ্কা বধের নায়ক বনে যান বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার।
আজ ২২ ডিসেম্বর বছরের শেষ ক্ষণে শেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচটি খেলতে নামবে টিম বাংলাদেশ। যদিও ফরম্যাট ভিন্ন; টি-টোয়েন্টি ম্যাচ। তারপরও টেস্ট, ওয়ানডে আর এই ফরম্যাটে ২০১৮ সালে এটাই শেষ ম্যাচ বাংলাদেশের।
বছরের শুরুতে ঘরের মাঠে তিন জাতি ওয়ানডে আসরে শিরোা জেতা সম্ভব না হলেও শুরু হয়েছিল উদ্ভাসিত জয় দিয়ে। আজ শেষ ম্যাচ জিতলে ‘ট্রিপল ক্রাউন’ অর্জনে হয়ত সে না পারার দুঃখ ঘুচবে। অতৃপ্তির বদলে এক বড় অর্জন প্রাপ্তি যোগ হবে। যা দেশের ক্রিকেট ইতিহাসকেই করবে সমৃদ্ধ।
ইতিহাস জানাচ্ছে এর আগে কখনো বাংলাদেশ তিন ফরম্যাটে সিরিজ জিততে পারেনি। তবে সম্ভাবনা ছিল ২০০৯ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে। সেবার টেস্টে (৯৫ রান ও ৪ উইকেটে) ২-০ আর তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে ক্যারিবীয়দের হোয়াইটওয়াশ (৫২ রান, ৩ উইকেট ও ৩ উইকেটে জিতেছিল টাইগাররা) করলেও এক ম্যাচের টি-টোয়েন্টি ম্যাচ আর জিততে পারেনি সাকিবের দল। হেরেছিল ৫ উইকেটে।
এরপর ২০১৫ সালে পাকিস্তানের সাথেও ট্রিপল ক্রাউন জেতার সুযোগ ছিল। সেবার তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে পাকিস্তানীদের ‘বাংলাওয়াশ’ করার পর একমাত্র ওয়ানডেতেও জিতেছিল টাইগাররা; কিন্তু টেস্টে পারেনি। খুলনায় তামিম ইকবালের দারুণ ডাবল সেঞ্চুরি (২০৬) আর ইমরুল কায়েসের ১৫০ রানের দারুণ ইনিংস ও প্রথম উইকেটে ৩১২ রানের রেকর্ড জুটিতে কৃতিত্বপূর্ণ ড্র করলেও ঢাকায় হেরে গিয়েছিল ৩২৮ রানের বড় ব্যবধানে। আর তাতেই ট্রিপল ক্রাউন জেতার এক সুযোগ হাতছাড়া হয়েছিল।
তিন বছর পর আবার এসেছে সেই তিন ফরম্যাটে সিরিজ বিজয়ের সুবর্ণ সুযোগ। আজ জিততে পারলে সাফল্যের নতুন ইতিহাস রচিত হবে বাংলাদেশ ক্রিকেটে।
এমনিতেই তিনি বাংলাদেশ দলের প্রাণশক্তি। সেই অভিষেকের পর যত দিন গড়াচ্ছে, ততই দলের সাফল্যের কান্ডারি সাকিব। তারপরও এ বছর ব্যাট ও বল হাতে একদম বছরের প্রথম থেকেই দলের সাফল্যে রাখছেন অগ্রণী ভূমিকা। সেই সাকিবের নেতৃত্বে আজ কি সেই সোনালী সাফল্যের দেখা মিলবে আবরও?