রাজশাহীর পবা উপজেলার বামুনশিকড় এলাকায় উদ্ধার হওয়া একই পরিবারের চার মরদেহের দাফন সম্পন্ন হয়েছে। এর মধ্যে মা-মেয়ের মরদেহ নিয়েছেন মিনারুলের শাশুড়ি আর নিহত মিনারুল ও ছেলে মাহিমের মরদেহ নিয়েছেন মিনারুলের বাবা রুস্তম আলী। এর ফলে চারজনের মরদেহ দাফন সম্পন্ন হয়েছে দুই জায়গায়।
শনিবার (১৬ আগস্ট) বিকেল সাড়ে ৫টায় মিনারুল ও তার ছেলে মাহিমকে নিজ এলাকা পবা উপজেলার বামুনশিখড়ে দাফন করা হয়। এ ছাড়া মিনারুলের স্ত্রী মনিরা ও মেয়ে মিথিলাকে নগরীর টিকাপাড়া কবরস্থানে বাদ মাগরিব দাফন করা হয়।
এর আগে, সকালে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষ হয়। এরপর চারজনের মরদেহ মিনারুলের গ্রামে নিয়ে আসার কথা ছিল। তাই মিনারুলের পরিবারিক কবরস্থানে তিনটা কবর খোড়া শেষ হয়েছিল। আর একটা কবর খোড়ার প্রস্তুতিকালে খবর আসে গ্রামে মরদেহ দুইটা আসবে। আর মা ও মেয়ের মরদেহ নিয়ে যাবে মিনারুলের শাশুড়ি।
উল্লেখ্য, শুক্রবার (১৫ আগস্ট) সকালে রাজশাহীর পবা উপজেলার বামুনশিখড় এলাকার নিজ বাড়ি থেকে একই পরিবারের চারজনের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এই ঘটনায় হত্যা ও অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। হত্যা মামলার বাদী মিনারুলের শাশুড়ি শিউলি খাতুন। আরেকটি অপমৃত্যু মামলা করেন মিনারুলের বাবা রুস্তম। আর মরদেহের পাশে থাকা দুই পৃষ্ঠার একটি চিরকুটও উদ্ধার করা হয়।
একই পরিবারের ৪ জনের মরদেহ, চিরকুটে লেখা ‘আমি নিজ হাতে সবাইকে মারলাম’
একই পরিবারের ৪ জনের মৃত্যুর ঘটনায় দুই মামলা
চিরকুটের এক জায়গায় লেখা আছে, ‘আমরা মরে গেলাম ঋণের দায়ে আর খাওয়ার অভাবে।’ পরিবার পুলিশ ও স্থানীয় লোকজনের ধারণা অভাবের কারণে মিনারুল তার স্ত্রী এবং দুই সন্তানকে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর নিজে আত্মহত্যা করেছেন।
মেয়ে ও ছোট নাতনির মরদেহ শাশুড়ি নেবেন। এই বিষয়ে ফয়সালা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পবার পারিলা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. সাঈদ আলী। তিনি বলেন, ছেলের পরিবার চারটি মরদেহই নিতে চেয়েছিল। পরে তিনটি মরদেহ নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। এ জন্য তিনটি কবরও খোঁড়া হয়েছে। কিন্তু মরদেহ নিয়ে নানা জটিলতায় শেষ পর্যন্ত ছেলে ও বাবাকে গ্রামের নিয়ে যাওয়া হবে। মা ও ছোট মেয়েকে শাশুড়ির কাছে দেওয়া হয়।
এ বিষয়ে মতিহার থানা-পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল মালেক বলেন, তারা দুই পরিবার মিলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে দুটি করে মরদেহ দুই পরিবার নিয়ে দাফন করবে। মরদেহগুলো হস্তান্তর করা হয়েছে। ওই ঘটনায় দুটি পৃথক মামলা হয়েছে। একটি অপমৃত্যু ও অপরটি হত্যা মামলা।