আমার বাবা রক্ত বিক্রি করে টাকা এনে ইত্তেফাক ছাপার জন্য কাগজ কিনেছেন: দীপু মনি শিক্ষামন্ত্রী

আমার বাবা এম এ ওয়াদুদের কাছে আমরা যা ছিলাম ইত্তেফাক তার চেয়েও বেশি কিছু ছিল উল্লেখ করে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেছেন, এমন অনেক দিন গেছে ইত্তেফাক ছাপার কাগজ কেনার পয়সা নেই। সোহরাওয়ার্দী সাহেবের কাছ থেকে হয়তো টাকা আসেনি অথবা কোনো কারণে কাগজ বাকিতে দিচ্ছে না। তখন তিনি নিজে ঢাকা মেডিকেল কলেজে গিয়ে রক্ত বিক্রি করে টাকা এনে ইত্তেফাক ছাপার জন্য কাগজ কিনেছেন।
রবিবার সন্ধ্যায় জাতীয় প্রেসক্লাবে চন্দ্রাবতী একাডেমি আয়োজিত শহীদ সাংবাদিক সিরাজুদ্দীন হোসেন স্মরণে ‘মঞ্চে-নেপথ্যে’ এবং ‘সিরাজুদ্দীন হোসেন ও সমকালীন সাংবাদিকতা’ নামে দুটি বইয়ের প্রকাশনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন দীপু মনি।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আমার বাবা ছাত্রলীগের প্রথম কাউন্সিলের নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক ও আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য। ইত্তেফাকের সঙ্গে তার সম্পর্কটা দলীয় কারণে। ইত্তেফাকে কাজ ছিল তার নেতার দেওয়া দায়িত্ব। সেই হিসেবেই তিনি কাজ করতেন।
তিনি বলেন, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী সাহেব দলীয়ভাবে ৬ ছাত্রনেতাকে ডেকে বলেছিলেন- তোমরা পত্রিকা (ইত্তেফাক) চালাতে পারবে কিনা? বাবা ছিলেন ওই ছয়জনের একজন। তারা রাজি হয়েছিলেন। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত ইত্তেফাকের সঙ্গে জড়িত ছিলেন তিনি। বাকি ৫ জন বিভিন্ন সময়ে ইত্তেফাক ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন। বাবা সারাটা জীবন ইত্তেফাক পত্রিকায় কাটিয়েছেন। রাতের বেলা কাজ শেষে তিনি ইত্তেফাকে অফিসের টেবিলেই ঘুমিয়ে পড়তেন আর সকালে সাইকেল নিয়ে রাস্তায়-রাস্তায় পত্রিকা বিলি করতেন।
অনুষ্ঠানে শহীদ সাংবাদিক সিরাজুদ্দীন হোসেন সম্পর্কে স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে দীপু মনি বলেন, বাবার সঙ্গে সিরাজ কাকার সম্পর্ক সম্পাদক আর কর্মীর মতো ছিল না। তা ছিল রক্তের সম্পর্কের মতো। আমরা ওনাকে সিরাজ কাকা বলে ডাকতাম। ওনার ছেলে-মেয়ে আমার বাবাকে ওয়াদুদ কাকা বলে ডাকতেন।
প্রকাশনা অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন- জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান, দৈনিক জনকণ্ঠের উপদেষ্টা সম্পাদক তোয়াব খান, জাতীয় জাদুঘর বোর্ড অব ট্রাস্টির সভাপতি শামসুজ্জামান খান, বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক হাবিবুল্লাহ সিরাজী প্রমুখ।